তবে আশ্চর্যের বিষয় যাঁদের ইংরেজির সঙ্গে কোনও আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ নেই বললেই চলে, তাঁরাই পর্যটকদের সাবলীল ভাবে ইংরেজিতে পাখিদের নাম বলেন, জানান তাদের বৈশিষ্ট্য, স্বভাব, অভ্যাস। তাঁদের মুখে যখন শোনা যায় ইংরেজিতে পরিযায়ী পাখিদের নাম। তখন অবাক না হয়ে উপায় থাকে না। সাধারণ মানুষের পক্ষে যেসব নাম মনে রাখা কঠিন, মাঝিরা তা নিখুঁতভাবে বলে যান বিনা দ্বিধায় একেবারে নির্ভুল ভাবে। নৌকাচালক শংকর পারুই এই বিষয়ে বলেন, “আমি স্কুলে পর্যন্ত যায়নি, কোনওরকমে নাম টা সই করতে জানি। পাখির নাম এখন সবই বলতে পারি। বিভিন্ন পাখিদের নাম আমার জানা রয়েছে।
advertisement
১৫-১৬ বছর ধরে পাখি দেখাতে দেখাতে সব নাম আমাদের মুখস্থ হয়ে গিয়েছে। এখানে ৮৬ জন নৌকা মাঝি রয়েছেন। তবে ২৫ থেকে ৩০ জন ভালভাবে পাখিদের নাম ইংরেজিতে বলতে পারেন। বাকিদের এখনও সেভাবে অভিজ্ঞতা হয়নি। মাঝিদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, তাঁদের এই দক্ষতার পেছনে আছে শুধুই অভিজ্ঞতার আলো। বহু বছর ধরে পর্যটকদের পাখি দেখানোর কাজ করতে করতেই যেন তাঁদের জিভে মিশে গিয়েছে পাখিদের ইংরেজি নাম। অথচ শুরুটা ছিল একেবারেই সরল। অনেক বছর আগে যখন প্রথম কিছু চিত্রগ্রাহক চুপি পাখিরালয়ে ছবি তুলতে আসেন, তাঁরা মাঝিদের হাতে তুলে দেন একটি অ্যালবাম।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
যেখানে পাখিদের ছবি এবং ইংরেজি নাম দুটোই ছিল। সেই ছোট্ট অ্যালবামই হয়ে ওঠে মাঝিদের শিক্ষার পথপ্রদর্শক। সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিদিনের চর্চা, পর্যটকদের সঙ্গে নিয়মিত কথোপকথন আর নিরন্তর পর্যবেক্ষণে জ্ঞান শুধু বেড়েই চলেছে। এখন অবস্থা এমন, যে কোন পাখি কোথায় বসে, কোন ঋতুতে আসে, কতক্ষণ থাকে সবই যেন হাতের মুঠোয়। পেশায় তাঁরা সাধারণ নৌকা মাঝি ঠিকই, কিন্তু তাঁদের জ্ঞান, পরিশ্রম আর অভিজ্ঞতা চুপি পাখিরালয়কে করেছে আরও সমৃদ্ধ, আরও পর্যটক বান্ধব। তাঁদের জন্যই আজ হাজার হাজার মানুষ শুধু পাখি দেখতে আসেন না, সঙ্গে পেয়ে যান জলের বুক থেকে উঠে আসা একেকটি অদ্ভুত সুন্দর গল্প, পাখির গল্প, প্রকৃতির গল্প, এবং অভিজ্ঞতার এক আলাদা বহিঃপ্রকাশ।





