প্রতিবছর ধনতেরাসের আগে ঝাঁটা তৈরির ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়। সকাল থেকে রাত অবধি সমানভাবে হাত চলতে থাকে। কারও হাতে বাঁধা হচ্ছে নারকেল কাঠি, কেউ আবার দড়ি পেঁচিয়ে দিচ্ছেন শেষ পর্বের গাঁট। এখন তাঁদের দম ফেলারও সময় নেই।
advertisement
ঝাঁটা প্রস্তুতকারক শেখ আব্দুর সামাদ বলেন, “প্রত্যেক বছর ধনতেরাসের আগে আমাদের তৈরি ঝাঁটার চাহিদা বেড়ে যায়। এখন পালিশগ্রাম থেকে নদিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, হুগলি, হাওড়া সহ বিভিন্ন জেলায় ঝাঁটা যাচ্ছে।” পালিশগ্রামের ঘোষপাড়ায় শেখ আব্দুর সামাদের কারখানায় এখন জোরকদমে ঝাঁটা তৈরির কাজ চলছে। এখানকার ঝাঁটা মূলত নারকেল কাঠি দিয়ে তৈরি হয়। মেদিনীপুর থেকে ট্রাকভর্তি করে সেই কাঠি আসে। তারপর স্থানীয় কারিগররা নানা পদ্ধতিতে সেই কাঠি সাজিয়ে টেকসই ঝাঁটা তৈরি করেন। প্রতিটি ঝাঁটায় মিশে থাকে দক্ষতা, ধৈর্য ও বহু বছরের অভিজ্ঞতা।
আরেক ঝাঁটা প্রস্তুতকারক আকাশ মল্লিক জানিয়েছে, “অন্যান্য সময় আমাদের দিনে মজুরি হয় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। কিন্তু এখন ধনতেরাসের জন্য কাজের চাপও বেশি এবং মজুরিও বেশি পাচ্ছি। দিনে প্রায় ১০০০-১২০০ টাকা রোজগার হচ্ছে। ধনতেরাসের জন্য আমরাও খুবই আনন্দিত।”
পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের পালিশগ্রামে তৈরি হওয়া ঝাঁটা শুধু স্থানীয় বাজারেই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যেমন বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ এমনকি কলকাতার পাইকারি বাজারেও যাচ্ছে। এই সময়ে অর্ডারের পরিমাণ এতটাই বেশি যে রাত জেগেও কাজ করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে ধনতেরাসের আগে পালিশগ্রামে ঝাঁটা তৈরির এই কর্মচাঞ্চল্য এখন এক অনন্য দৃশ্য। যেখানে ঘাম ঝরিয়ে, দীর্ঘ পরিশ্রমে তৈরি হচ্ছে সরল অথচ প্রয়োজনীয় এক জিনিস।