পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরার এক স্টুডিও ব্যবসায়ী সৌরভ জানা বলেন, সারা বছর তেমন চাহিদা না থাকলেও পুজোর কয়েকটা মাস বেশ চাহিদা। সারা বছরের রোজগারের এই পুজোর কয়েকটা মাসে। এখন নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই। আগে স্টুডিও মানে ছিল বিয়ে, জন্মদিন বা ছোটখাটো অনুষ্ঠান। এখন সময় বদলেছে। দুর্গাপুজো এলেই একের পর এক কমিটি থেকে ফোন আসে লাইভ কভারেজের জন্য। অষ্টমীর কুমারী পুজো, নবমীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিংবা দশমীর শোভাযাত্রা, প্রত্যেকটির জন্য আলাদা আলাদা সময়ে বুকিং হচ্ছে।
advertisement
আরও পড়ুন : পুজোর আগে দারুণ খবর! বেলদার জন্য রেলের জোড়া উপহার, উড়ালপুলেই বদলাবে ছবি
ফলে পুজোর আগেই কর্মীদের রাতদিন এক হয়ে যাচ্ছে সরঞ্জাম টেস্টিং, ক্যামেরা, লাইট, অডিও মেরামতি আর ইন্টারনেট সংযোগ মজবুত করার কাজে। প্রযুক্তির ব্যবহারও বদলাচ্ছে। আগে যেখানে সাধারণ একটি মোবাইল ফোনে লাইভ হত, এখন ব্যবহার হচ্ছে মাল্টি–ক্যামেরা সেটআপ, সুইচার, সাউন্ড মিক্সার। অনেকে গ্রাফিক্সের মাধ্যমে কমিটির নাম, স্পনসরের লোগো কিংবা লাইভে দর্শকের মন্তব্যও তুলে ধরছেন। বিজয়ার সময় অনেক জায়গায় ড্রোন শট নেওয়া হচ্ছে, যাতে মণ্ডপ ও শোভাযাত্রার পুরো দৃশ্য আরও আকর্ষণীয়ভাবে ধরা যায়।
আরও পড়ুন : চায়ের কাপে ভয়ংকর খেলা! ঘুমপাড়ানি চা খাইয়ে এক প্রেমিকের সঙ্গে উধাও দুই জা
শুধু লাইভেই কাজ থেমে নেই, তার পরেও তৈরি হচ্ছে হাইলাইট ভিডিও, ছোট ছোট রিল, যেগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও দর্শক টানছে। এই ছবির অন্যতম মুখ এগরার সৌরভ জানা। দু’এক বছর আগে শুরু করেছিলেন স্টুডিও ব্যবসা। প্রথমে ভেবেছিলেন সারা বছর কাজ কম থাকলে ব্যবসা টিকবে না। কিন্তু দুর্গাপুজো এসে তাঁর ধারণা বদলে দিয়েছে। এখন প্রতি বছর একের পর এক পুজো কমিটি থেকে বায়না আসে। ক’দিন ঘুমহীন রাত কাটিয়ে লাইভ কভারেজ সামলাতে হয় তাঁকে ও তাঁর কর্মীদের। তবে এই সময়কার আয়ই তাঁর স্টুডিওকে সারা বছর সচল রাখে।
আরও পড়ুন : ঘুম ভাঙল গর্জনে! বাইরে বেরিয়েই স্থানীয়রা যা দেখলেন, বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না
চাহিদা বাড়ার ফলে কর্মসংস্থানও তৈরি হচ্ছে। অনেক তরুণ-তরুণী অস্থায়ীভাবে ক্যামেরা অ্যাসিস্ট্যান্ট, লাইট অপারেটর বা সোশ্যাল মিডিয়া মডারেটর হিসেবে কাজ করছেন। এতে যেমন স্টুডিওর কাজ সহজ হচ্ছে, তেমনই নতুনদের হাতেকলমে শেখার সুযোগও তৈরি হচ্ছে। সবশেষে বলা যায়, দুর্গাপুজো আজ আর মণ্ডপে সীমাবদ্ধ নয়। প্রযুক্তির হাত ধরে তা ছড়িয়ে পড়ছে দেশ–বিদেশে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
পাড়ার পুজোর আয়োজন এখন প্রবাসী আত্মীয় কিংবা বিদেশে থাকা বন্ধুদের চোখেও সমান আনন্দের উৎস। এই প্রবণতা যেমন সাধারণ দর্শককে আনন্দ দিচ্ছে, তেমনই ছোট ছোট স্টুডিও মালিকদের জন্যও খুলে দিচ্ছে নতুন রোজগার ও নতুন স্বপ্নের দরজা। মণ্ডপের আলো যেমন চারপাশ আলোকিত করে তোলে, তেমনই সোশ্যাল মিডিয়ার আলো আজ অনেক স্টুডিওর জীবন ও ভবিষ্যৎকেও আলোকিত করছে।