এ যেন শেষ থেকে শুরু! রায় পরিবারের দুর্গা পুজো বহু প্রাচীন রীতি মেনেই আজও চলে আসছে বংশপরম্পরায়। ওই ঐতিহ্যবাহী পুজোর অনুভুতি উপলদ্ধি করতে একত্রিত হয় বর্তমান প্রজন্মও। মহাসপ্তমীর ভোরে লালপাড় সাদা শাড়ি পড়ে মায়ের মন্দিরে ভিড় করেন পরিবার সহ এলাকার মহিলারা। ওই মন্দির চত্বরেই হয় সিঁদুর খেলা।
আরও পড়ুন : দুর্ঘটনা শুনেই উদ্ধারে ছুটেছিলেন, কিন্তু নিজেই শেষ হয়ে গেলেন সিভিক ভলান্টিয়ার! যা হল, শুনলেই মন খারাপ
advertisement
উল্লেখ্য, দশমীর দিন দেবী দুর্গার বিসর্জনের আগে বিবাহিত নারীরা দেবীর চরণে সিঁদুর নিবেদন করে একে অপরের সঙ্গে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। এই প্রথা মূলত দেবী উমার বিদায় ও বিবাহিত জীবনে সুখ-শান্তি কামনায় পালন করা হয়ে থাকে। পাশাপাশি দুর্গাপুজোর বিজয়া দশমীর দিন একে অপরকে নারকেল নাড়ু খাওয়ানোর প্রথা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। কিন্তু রায় পরিবারের পুজোয় এ যেন একেবারেই উলট পুরাণ।
প্রসঙ্গত, দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট তৈরির সময় বহু জমি অধিগ্রহণ হয়েছিল। তখন কয়েকটি পুরনো গ্রামও তার মধ্যে পড়ে যায়। সেখানকার বাসিন্দাদের স্থানান্তর করা হয় গোপালমাঠে। সেই গ্রামগুলিতে বংশপরম্পরায় দুর্গাপুজো হত। গোপালমাঠে প্রায় দশটি পারিবারিক পুজো হয়।
আরও পড়ুন : সাময়িক বন্ধ অর্জুনপুর আমরা সবাই ক্লাবের ভাইরাল দুর্গাপুজো! কেন থেমে গেল দর্শন, কবে আবার খুলবে মণ্ডপ?
তার মধ্যে অন্যতম হল রায় পরিবারের পুজো। সব পুজোর কলা বৌ স্নান করাতে নিয়ে যাওয়া হয় রায় পুকুরে। তবে সবার প্রথম, সপ্তমীর দিন ভোরবেলা কলাবৌ স্নান করিয়ে আনে রায় পরিবার। রায় পরিবারের সদস্য বরুণ রায় ও তরুণ রায় জানান, তাঁদের পুজো ঠিক কত বছরের তার কোনও সঠিক ধারণা নেই। তবে বংশপরম্পরায় নয় পুরুষ ধরে এই পুজো হয়ে আসছে। পরিবারের কোনও এক পূর্বপুরুষ স্বপ্নে দেখেছিলেন, সপ্তমীর সকালে কলাবৌ স্নান করিয়ে নিয়ে এসে বরণ করার পরে, মা’কে সিঁদুর পরিয়ে মেয়েরা নিজেরা সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেছেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
সেই থেকে সপ্তমীর সকালে সিঁদুর খেলার রেওয়াজ চালু হয় এই পুজোয়।এই পরিবারে বৈষ্ণব মতে পুজো হয়। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত অন্নভোগের নিয়ম আজও পালিত হয়। অষ্টমীর সন্ধিক্ষণে মণ্ডা বলি হয়। তবে দশমীর দিন সিদ্ধি দিয়ে চিড়ে মাখা এবং চ্যাং মাছ পুড়িয়ে মায়ের ভোগ হয়। দশমীতে বিসর্জনের সময়ে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় গরুর গাড়িতে করে।