১৯৬৭ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই দেবী মূর্তির কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। এখানে দেবী দুর্গার সামনের দুটি হাতই বড়, পিছনের আটটি হাত আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট। দেবীর গায়ে থাকে বর্ম। দেবী যুদ্ধের বেশে সজ্জিত। পিছনে অর্ধগোলাকৃতি সাবেক বাংলা চালির এক দিকে আঁকা থাকে দশাবতার, অন্য দিকে দশমহাবিদ্যা। মাঝে থাকেন পঞ্চানন শিব। দেবীর বাহন পৌরাণিক সিংহ। সামনে থাকে ঝুলন্ত অভ্রধারা।
advertisement
প্রতিমার সাজেরও কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। প্রচলিত ডাকের সাজের চেয়ে আলাদা। একে বলা হয় 'বেদেনি ডাক'। এখন কামান দেগে সন্ধিপুজো না হলেও আজও পুজোর অন্যতম আকর্ষণ হল সন্ধিপুজো। রাজবাড়ির সন্ধিপুজো দেখতে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ। প্রথা মতোই থাকে ১০৮টি পদ্মফুল ও ১০৮টি প্রজ্বলিত প্রদীপ। আগে দুর্গাপুজোতে হতো ছাগবলি। এখন অবশ্য শুধু মাত্র আখ ও চালকুমড়ো বলি হয়। পুজোর ভোগ মহালয়ার পর থেকেই শুরু হয়ে যায়।
খিচুড়ি, ভাজা, ছ্যাঁচড়া-সহ একাধিক তরকারি, চাটনি, সুজি,পায়েস থাকে পুজোর ভোগে। সপ্তমীতে সাত রকমের ভাজা হয়। অষ্টমীতে পোলাও, ছানার ডালনার সঙ্গে ভাত, আট রকম ভাজা, মিষ্টি, ক্ষীর-সহ একাধিক পদ থাকে। নবমীতে নয় রকম ভাজা, তিন রকম মাছ, ভাত, মিষ্টি থাকে। দশমীতে গলা ভাত, সিঙি মাছ, খই, ফল, দই, চিড়ে ভোগ দেওয়া হয়। দশমী মানেই আকাশে বাতাসে বিষাদের সুর। সিঁদুরখেলায় মেতে ওঠেন রাজপরিবারের গৃহকর্ত্রী অমৃতা রায়।
আরও পড়ুন- কাঁথির কিশোর নগর গড়ের রাজবাড়িতে দেবী পূজিত হন পশ্চিমমুখী ঘটে, নেপথ্যে রয়েছে অদ্ভুত ঘটনা
২০০২ সালে তিনি সিঁন্দুর খেলা শুরু করেন। সকাল থেকেই রাজবাড়িতে ভিড় করেন অসংখ্য মহিলারা। রীতি মেনে চলে দেবী বরণ, এরপরই শুরু হয় সিঁদুরখেলা। সকলের মঙ্গল কামনায় এই সিঁদুরখেলা হয়। এ প্রসঙ্গে অমৃতা রায় বলেন,'সিঁদুরখেলা পুজোর অঙ্গ। সারা বছর অপেক্ষায় থাকি। একটা মিলন সংযোগ হয়। কিন্তু তাদের যদি ক্ষতি হয় সে কাজ তো করা যাবে না। তবে কোভিড বিধি মেনে যেটা করা যায় সেটাই করবো।' দশমীর দিন হয় যাত্রামঙ্গল অনুষ্ঠান।
Mainak Debnath
আরও পড়ুন- ১৮ পুতুলের দুর্গা পূজা! একচালায় একাধিক মূর্তি, বীরভূমের এই পুজোর বিশেষত্ব কী