Durga Puja 2021: কাঁথির কিশোর নগর গড়ের রাজবাড়িতে দেবী পূজিত হন পশ্চিমমুখী ঘটে, নেপথ্যে রয়েছে অদ্ভুত ঘটনা

Last Updated:
Durga Puja 2021: আজও কিশোর নগর গড় রাজবাড়ি দুর্গাপূজা দেখতে ভিড় জমায় এলাকাবাসীরা। কথিত আছে এই রাজপরিবারের পূর্বপুরুষ দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে দুর্গাপূজার প্রচলন করেন। (রিপোর্ট-সৈকত শী, কাঁথি)
1/6
কাঁথি মহাকুমার প্রাচীন বনেদি বাড়ির পুজো  কিশোর নগর গড় রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। তিন শতাব্দীর ইতিহাস সঙ্গে নিয়ে আজও সমান মর্যাদায় পূজিত হয় এই রাজবাড়ির দুর্গা প্রতিমা। কালের নিয়মে কমেছে জৌলুস। কিন্তু আজও কিশোর নগর গড় রাজবাড়ি দুর্গাপূজা দেখতে ভিড় জমায় এলাকাবাসীরা। কথিত আছে এই রাজপরিবারের পূর্বপুরুষ দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে দুর্গাপূজার প্রচলন করেন। যার আজ বর্তমান বয়স ৩০০ বছরেরও বেশি। প্রাচীন এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এখানে মায়ের ঘট পশ্চিম মুখী।
কাঁথি মহাকুমার প্রাচীন বনেদি বাড়ির পুজো কিশোর নগর গড় রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। তিন শতাব্দীর ইতিহাস সঙ্গে নিয়ে আজও সমান মর্যাদায় পূজিত হয় এই রাজবাড়ির দুর্গা প্রতিমা। কালের নিয়মে কমেছে জৌলুস। কিন্তু আজও কিশোর নগর গড় রাজবাড়ি দুর্গাপূজা দেখতে ভিড় জমায় এলাকাবাসীরা। কথিত আছে এই রাজপরিবারের পূর্বপুরুষ দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে দুর্গাপূজার প্রচলন করেন। যার আজ বর্তমান বয়স ৩০০ বছরেরও বেশি। প্রাচীন এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এখানে মায়ের ঘট পশ্চিম মুখী।
advertisement
2/6
কথিত আছে এই রাজ বাড়ির পূর্বপুরুষ রাজা যাদবরাম রায় দেবী মায়ের স্বপ্নাদেশ দুর্গাপূজার প্রচলন শুরু করেন। এই রাজ পরিবারের বর্তমান সদস্য দেবজ্যোতি রায় জানান, " প্রায় ১৭২০ সালে প্রথম এই পুজো শুরু হয়। স্বর্গীয় রাজা যাদবরাম রায় দেবী দুর্গার স্বপ্নাদেশে পুজো শুরু করেন। বর্তমানে পুজোর বয়স প্রায় ৩০০ বছর। পুজোতে একসময় বলি প্রথা প্রচলন ছিল। প্রতিবছর মহিষ বলি দেওয়া হত। মহিষ বলি চালু ছিল প্রায় ২৬৫ বছর। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মায়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত মহিষ মারা গেলে বন্ধ হয়ে যায় পশু বলি প্রথা। ১৯৮৫ সালের বন্যায় রাজবাড়ির গোশালা ভেঙে পড়ে।  গোশালায় দেবীর উৎসর্গীকৃত মহিষ দেওয়াল চাপা পড়ে মারা যায়। সে বছর থেকেই পশুবলি বন্ধ হয়ে যায়। পশু বলির পরিবর্তে আঁখ ও চাল কুমড়ো বলি শুরু হয় সেই বছর থেকে। এখনও আঁখ চাল কুমড়ো বলি দেওয়া হয় রীতি মেনে।"
কথিত আছে এই রাজ বাড়ির পূর্বপুরুষ রাজা যাদবরাম রায় দেবী মায়ের স্বপ্নাদেশ দুর্গাপূজার প্রচলন শুরু করেন। এই রাজ পরিবারের বর্তমান সদস্য দেবজ্যোতি রায় জানান, " প্রায় ১৭২০ সালে প্রথম এই পুজো শুরু হয়। স্বর্গীয় রাজা যাদবরাম রায় দেবী দুর্গার স্বপ্নাদেশে পুজো শুরু করেন। বর্তমানে পুজোর বয়স প্রায় ৩০০ বছর। পুজোতে একসময় বলি প্রথা প্রচলন ছিল। প্রতিবছর মহিষ বলি দেওয়া হত। মহিষ বলি চালু ছিল প্রায় ২৬৫ বছর। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মায়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত মহিষ মারা গেলে বন্ধ হয়ে যায় পশু বলি প্রথা। ১৯৮৫ সালের বন্যায় রাজবাড়ির গোশালা ভেঙে পড়ে। গোশালায় দেবীর উৎসর্গীকৃত মহিষ দেওয়াল চাপা পড়ে মারা যায়। সে বছর থেকেই পশুবলি বন্ধ হয়ে যায়। পশু বলির পরিবর্তে আঁখ ও চাল কুমড়ো বলি শুরু হয় সেই বছর থেকে। এখনও আঁখ চাল কুমড়ো বলি দেওয়া হয় রীতি মেনে।"
advertisement
3/6
কাঁথি শহরের কিশোর নগর গড় রাজবাড়ির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল মা এখানে পূজিত হন পশ্চিমমুখী ঘটে। পশ্চিমমুখী ঘটে দেবী দুর্গার আরাধনা বাংলার আর কোথাও হয় না। প্রাচীন এই দুর্গাপুজোর পরিবারের পশ্চিমমুখী ঘটে দেবী আরাধনার পিছনে আছে চমকপ্রদ কাহিনি। এই রাজপরিবারের সদস্য কাঁথি পৌরসভা প্রাক্তন ওয়ার্ড কাউন্সিলর কৃষ্ণা মিত্র জানান, দেবীর পূজার শুরু থেকে পশ্চিমমুখী ঘট স্থাপন হতো না। পশ্চিমবঙ্গে ঘট স্থাপন হয় পুজো শুরু হওয়ার আরও কুড়ি-পঁচিশ বছর পর। শোনা যায় পুজোর চার দিন দেবী মায়ের আরাধনা পাশাপাশি, দেবী বন্দনা হতো। ব্রাহ্মণরা পুজোর চারদিন দেবী বন্দনা গান করতেন।
কাঁথি শহরের কিশোর নগর গড় রাজবাড়ির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল মা এখানে পূজিত হন পশ্চিমমুখী ঘটে। পশ্চিমমুখী ঘটে দেবী দুর্গার আরাধনা বাংলার আর কোথাও হয় না। প্রাচীন এই দুর্গাপুজোর পরিবারের পশ্চিমমুখী ঘটে দেবী আরাধনার পিছনে আছে চমকপ্রদ কাহিনি। এই রাজপরিবারের সদস্য কাঁথি পৌরসভা প্রাক্তন ওয়ার্ড কাউন্সিলর কৃষ্ণা মিত্র জানান, দেবীর পূজার শুরু থেকে পশ্চিমমুখী ঘট স্থাপন হতো না। পশ্চিমবঙ্গে ঘট স্থাপন হয় পুজো শুরু হওয়ার আরও কুড়ি-পঁচিশ বছর পর। শোনা যায় পুজোর চার দিন দেবী মায়ের আরাধনা পাশাপাশি, দেবী বন্দনা হতো। ব্রাহ্মণরা পুজোর চারদিন দেবী বন্দনা গান করতেন।
advertisement
4/6
একবার এক জেলে সম্প্রদায়ের মানুষ এসে সেই সময়ের রাজাকে বলেন, তিনি এবছর দেবী বন্দনা গান গাইবে। সেই জেলে আরও বলেন, তিনি দেবী মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়েই দেবী বন্দনা গান করতে এসেছেন। কিন্তু জেলে ধীবর সম্প্রদায়ের মানুষ হওয়ায়, রাজপরিবারের কেউ রাজি ছিল না। ওই জেলে ধীবর সম্প্রদায়ের মানুষটি ব্যর্থ মনোরথে ফিরে যায়। সেবছর দুর্গা মায়ের আরাধনার সময় মায়ের মন্দিরে পেছনে বসে দেবী বন্দনা গান করেন। গান শুরু হলে দেখা যায় মায়ের পুজোর ঘট আপনা থেকেই মন্দিরের পিছন দিকে ঘুরে গিয়েছে এবং তা পশ্চিমমুখী।" সেই থেকে পশ্চিমমুখী ঘটে দেবী আরাধনা আজও হয়ে আসছে কাঁথির কিশোর নগর গড় রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয়।
একবার এক জেলে সম্প্রদায়ের মানুষ এসে সেই সময়ের রাজাকে বলেন, তিনি এবছর দেবী বন্দনা গান গাইবে। সেই জেলে আরও বলেন, তিনি দেবী মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়েই দেবী বন্দনা গান করতে এসেছেন। কিন্তু জেলে ধীবর সম্প্রদায়ের মানুষ হওয়ায়, রাজপরিবারের কেউ রাজি ছিল না। ওই জেলে ধীবর সম্প্রদায়ের মানুষটি ব্যর্থ মনোরথে ফিরে যায়। সেবছর দুর্গা মায়ের আরাধনার সময় মায়ের মন্দিরে পেছনে বসে দেবী বন্দনা গান করেন। গান শুরু হলে দেখা যায় মায়ের পুজোর ঘট আপনা থেকেই মন্দিরের পিছন দিকে ঘুরে গিয়েছে এবং তা পশ্চিমমুখী।" সেই থেকে পশ্চিমমুখী ঘটে দেবী আরাধনা আজও হয়ে আসছে কাঁথির কিশোর নগর গড় রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয়।
advertisement
5/6
প্রতিটি বনেদি পরিবারের প্রাচীন দুর্গাপূজার বিশেষ রীতিনীতি আছে। ভোগ প্রসাদের কিছু রীতিনীতি আছে। কিশোর নগর রাজবাড়ির দুর্গাপুজো শুরু হয় ষষ্ঠীর দিন ঘটোত্তলনের মধ্য দিয়ে। নিয়ম মেনেই মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী সন্ধিপুজো, মহানবমী এবং দশমীর পুজো ও বিসর্জন হয়। মহাষ্টমীর দিন অঞ্জলি দেওয়ার জন্য মানুষজন ভিড় করে আসে এই রাজ বাড়ির দালানে। নিয়ম মেনেই সন্ধিপুজো হয় ১০০টি প্রদীপ জ্বালিয়ে। প্রদীপের সলতে তৈরির কাজে হাত লাগান রাজপরিবারের মহিলারা। একসময় ঘটোত্তলনের সময়ে কামান দাগা হতো। পুজোয় দেবী মাকে অন্নভোগ ফল মিষ্টান্ন ভোগ নিবেদনের পাশাপাশি কাজু বাদাম দিয়ে হাতে তৈরি এক প্রকার সন্দেশ ভোগ দেওয়া হয়। এই কাজু বাদাম দিয়ে সন্দেশ ভোগ কাঁথির আর কোনও পুজোতে দেওয়া হয় না। এই সন্দেশ ভোগ প্রসাদ লাভের জন্য মানুষের ভিড় জমে। বর্তমানে এই বিশেষ ভোগের জন্য টিকিটের ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
প্রতিটি বনেদি পরিবারের প্রাচীন দুর্গাপূজার বিশেষ রীতিনীতি আছে। ভোগ প্রসাদের কিছু রীতিনীতি আছে। কিশোর নগর রাজবাড়ির দুর্গাপুজো শুরু হয় ষষ্ঠীর দিন ঘটোত্তলনের মধ্য দিয়ে। নিয়ম মেনেই মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী সন্ধিপুজো, মহানবমী এবং দশমীর পুজো ও বিসর্জন হয়। মহাষ্টমীর দিন অঞ্জলি দেওয়ার জন্য মানুষজন ভিড় করে আসে এই রাজ বাড়ির দালানে। নিয়ম মেনেই সন্ধিপুজো হয় ১০০টি প্রদীপ জ্বালিয়ে। প্রদীপের সলতে তৈরির কাজে হাত লাগান রাজপরিবারের মহিলারা। একসময় ঘটোত্তলনের সময়ে কামান দাগা হতো। পুজোয় দেবী মাকে অন্নভোগ ফল মিষ্টান্ন ভোগ নিবেদনের পাশাপাশি কাজু বাদাম দিয়ে হাতে তৈরি এক প্রকার সন্দেশ ভোগ দেওয়া হয়। এই কাজু বাদাম দিয়ে সন্দেশ ভোগ কাঁথির আর কোনও পুজোতে দেওয়া হয় না। এই সন্দেশ ভোগ প্রসাদ লাভের জন্য মানুষের ভিড় জমে। বর্তমানে এই বিশেষ ভোগের জন্য টিকিটের ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
advertisement
6/6
প্রাচীন বনেদি বাড়ি বা রাজপরিবারের পুজো মানেই পরিবারের মিলন উৎসব। পূজার ক'টা দিন বাড়িতে হৈ-হুল্লোড় সদস্যদের মধ্যে জমিয়ে আড্ডাতে মেতে ওঠে পরিবারের সদস্যরা। দিব্যজ্যোতি রায় এই রাজপরিবারের বর্তমান প্রজন্মদের একজন, 'তিনি জানান পুজোর সময়ে পরিবারের সব সদস্যই বাড়িতে থাকে। কাজের সূত্রে কাজের সূত্রে ভিন রাজ্যে বা বিদেশে থাকা রাজ পরিবারের সদস্যরা পুজোর আগেই ষষ্ঠীর আগেই বাড়িতে ফিরে আসে। ওই পূজার কটা দিন সবাই মেতে ওঠে পুজোয়।' বনেদি রাজপরিবারের প্রাচীন এই পুজোর জৌলুস কিছুটা কমেছে। কিন্তু বর্তমানেও পূজিত হয় দেবী দুর্গা প্রাচীন রীতি নীতি অনুসারে।
প্রাচীন বনেদি বাড়ি বা রাজপরিবারের পুজো মানেই পরিবারের মিলন উৎসব। পূজার ক'টা দিন বাড়িতে হৈ-হুল্লোড় সদস্যদের মধ্যে জমিয়ে আড্ডাতে মেতে ওঠে পরিবারের সদস্যরা। দিব্যজ্যোতি রায় এই রাজপরিবারের বর্তমান প্রজন্মদের একজন, 'তিনি জানান পুজোর সময়ে পরিবারের সব সদস্যই বাড়িতে থাকে। কাজের সূত্রে কাজের সূত্রে ভিন রাজ্যে বা বিদেশে থাকা রাজ পরিবারের সদস্যরা পুজোর আগেই ষষ্ঠীর আগেই বাড়িতে ফিরে আসে। ওই পূজার কটা দিন সবাই মেতে ওঠে পুজোয়।' বনেদি রাজপরিবারের প্রাচীন এই পুজোর জৌলুস কিছুটা কমেছে। কিন্তু বর্তমানেও পূজিত হয় দেবী দুর্গা প্রাচীন রীতি নীতি অনুসারে।
advertisement
advertisement
advertisement