প্রবল বর্ষণে ইতিমধ্যেই দিঘার সৈকত প্রায় ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। সাধারণত বিজয়া দশমীর পরে সমুদ্রতীরবর্তী পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে প্রচুর ভিড় থাকে। পর্যটকরা আসেন পুজোর ছুটি কাটাতে। কিন্তু নিম্নচাপের দাপটে এবার সেই আনন্দ যেন নিমেষে থমকে গেল। সকাল থেকেই সমুদ্রের ঢেউ একের পর এক আছড়ে পড়ছে তটে। উত্তাল সমুদ্রের কারণে প্রশাসনের তরফে কড়া নজরদারিও শুরু হয়েছে। পর্যটকদের সৈকতে নামতে বারবার নিষেধ করা হচ্ছে। ফলে হোটেলগুলিতে কার্যত বন্দি হয়ে পড়েছেন অসংখ্য পর্যটক।
advertisement
আরও পড়ুনঃ দশমীর সকালে হাড়হিম কাণ্ড! বুকে-পিঠে ক্ষত, অশোকনগরে রাস্তার ধারে পড়ে রক্তাক্ত তরুণীর দেহ
হোটেল মালিকদের কথায়, হঠাৎ করেই আবহাওয়ার এমন খামখেয়ালিপনা পর্যটন ব্যবসায় বড় ধাক্কা দিতে পারে। অনেকেই বিজয়ার অগ্রিম বুকিং করেছিলেন, কিন্তু সৈকত ঘুরে দেখার সুযোগ না মেলায় তাঁদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। অন্যদিকে, যাঁরা বিজয়ার দিনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মণ্ডপে একাধিক সাংস্কৃতিক কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন, তাঁদেরও কার্যক্রম বাতিল করতে হয়েছে। বিজয়ার আনন্দ-উৎসব রীতিমত নিম্নচাপের করাল গ্রাসে ভেস্তে গেল।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত এই গভীর নিম্নচাপের ফলে উপকূলীয় জেলা পূর্ব মেদিনীপুর সহ সংলগ্ন জেলাগুলিতেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে সতর্ক রাখা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এদিকে, টানা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার জেরে দিঘার রাস্তাঘাটেও জল জমে গিয়েছে। অনেক জায়গায় ছোটখাটো জলাবদ্ধতার ছবি ধরা পড়েছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টির জেরে দৈনন্দিন জীবনও ব্যাহত হচ্ছে। বাজার এলাকায় ভিড় কমেছে, পরিবহণও অনেকটাই ব্যাহত। পর্যটকদের হতাশার মধ্যেই প্রশাসনের তরফে জানান হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে সৈকত উত্তাল অবস্থায় দিঘার সমুদ্র স্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবেই।
আগামী কয়েকদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সমুদ্রতীরবর্তী এই জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে উৎসবের আমেজ ফিরবে না বলেই আশঙ্কা করছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। বিজয়ার আনন্দের রঙ মুছে দিয়ে দিঘায় নেমে এসেছে নিম্নচাপের রক্তচক্ষু। উত্তাল সমুদ্র আর নিরবচ্ছিন্ন বৃষ্টির দাপটে পর্যটন শিল্পের প্রাণকেন্দ্র দিঘা যেন পরিণত হয়েছে ভয়ঙ্কর দুর্যোগের ছবিতে।