কিন্তু এক সময় গুরুত্বপূর্ণ নথি বা চিঠিপত্র আদান-প্রদানে ভরসা ছিল ‘রানার’। গ্রামের পর গ্রাম, মাঠের পর মাঠ। জঙ্গল, দুর্গম রাস্তা পেরিয়ে রাত-দিন এক করে ছুটে চলত রানার। এক হাতে লন্ঠন অন্য হাতে বল্লম আর কাঁধে খবরের বোঝা নিয়ে ছুটে চলত রানার। বাগনান বাঙালপুর বয়েজ ক্লাবের ১০৩ বছরে এবারের কালীপুজোর ভাবনা ‘রানার’।
advertisement
আরও পড়ুনঃ জলাশয়ে দেশীয় মাছের শত্রুর হানা! খেয়ে সাবাড় করে দিচ্ছে সমস্ত কিছু, চরম বিপাকে বসিরহাটের মাছ চাষ
সুকান্ত ভট্টাচার্যের কাল জয়ী সৃষ্টি ‘রানার’ কবিতা। সেই কবিতা অবলম্বনে কালীপুজোর মণ্ডপকে রূপ দেওয়া হয়েছে। বাঙালপুর বয়েজ ক্লাব সারা বছর বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়ে থাকে। তাঁর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিবছর মণ্ডপ সাজিয়ে তোলা হয়। বাঙালপুর গ্রামে প্রায় ১৬ থেকে ১৮টি পুজো হয়। তবে শতাব্দী প্রাচীন এই পুজোর প্রতি বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের আকর্ষণ থাকে অন্য মাত্রায়। পুজোর কয়েক মাস আগে থেকে স্থানীয় মানুষের মধ্যে উৎসাহ দেখা যায় বাঙালপুর বয়েজ ক্লাবের মণ্ডপ সজ্জার বিষয়বস্তু জানতে। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে কয়েকজন স্বাধীনতার সংগ্রামীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে শক্তি দেবীর আরাধনা করতে পুজোর সূচনা হয়। সেই থেকে এখানে ভক্তি ভরে মাতৃ আরাধনা চলছে। এর পাশাপাশি পুজোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা কর্মসূচি।
এবার সাত লক্ষ টাকা ব্যয় করে গত তিন মাসের চেষ্টায় সেজে উঠেছে মণ্ডপ। ডাক ব্যবস্থা সূচনা এবং কীভাবে সে সময় চিঠিপত্র আদান- প্রদান চলত। দর্শনার্থীদের স্মরণ করিয়ে দিতেই শৈল্পিক নৈপুণ্যতায় সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। একজন রানারের কঠিন জীবন কাহিনিকে তুলে ধরা হয়েছে মণ্ডপ জুড়ে। মণ্ডপে প্রকৃতি, জলা জঙ্গল, দুর্গম পথ এবং রানার জীবনচিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এ প্রসঙ্গে উদ্যোক্তা জানান, বাঙালপুর বয়েজ ক্লাবের পুজো এবার ১০৩ বর্ষে পদার্পণ করেছে। এবারের ভাবনা ‘রানার’। বর্তমান সময়ে বার্তা আদান-প্রদান ব্যবস্থা খুব সহজ হলেও এক সময় দারুন কঠিন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আদান-প্রদান চলত চিঠি। সেই চিত্র দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে এবার। উদ্যোক্তারা আরও জানান, সারা বছর বিভিন্ন সচেতনতা এবং কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিষ্ঠানের কালীপুজোর মণ্ডপ সেজে ওঠে। এবার প্রকৃতি ও পরিবেশের দিকে গুরুত্ব দিয়ে মণ্ডপে আগত দর্শনার্থীদের হাতে চারা গাছ উপহার দেওয়া হচ্ছে।