কৃষ্ণনগর গোয়ালদহ নতুন পাড়া এলাকায় তাঁর বাড়ি। পাড়াটিকে অনেকে ফুচকা পাড়া নামেও চেনে। সেখানেই বিশ্বজিৎ বাবু খুলেছেন তিনটি ক্রিকেট ব্যাটের দোকান। বাবা চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস আজও কোতোয়ালি থানার সামনে বিক্রি করেন ফুচকা। তবে ছেলের এখন বর্তমানে তিনটি দোকান।
দোকানে রয়েছে সমস্ত খেলার সামগ্রী, যার মধ্যে অন্যতম ক্রিকেট ব্যাট। তবে এই ব্যাট তারা নিজেরা বানান কৃষ্ণনগরের বুকেই। আর এখান থেকেই পাইকারি এবং খুচরো বিক্রি করেন গোটা দেশজুড়ে। তার এই দোকান এবং কারখানায় কাজ করে আজ স্বনির্ভর বহু কর্মীরা।
advertisement
ক্রিকেট ব্যাট সাধারণত কাশ্মীরের উইলো কাঠ দিয়ে তৈরি হয়। সেই ব্যাটের সুনাম রয়েছে গোটা বিশ্বজুড়ে। তবে কাশ্মীর থেকে সেই উইলোকাঠ ট্রান্সপোর্ট এর মাধ্যমে এনে তারাই এখন কৃষ্ণনগরের বুকে তৈরি করছেন বিভিন্ন ধরনের ব্যাট। এছাড়াও কম দামি লোকাল ব্যাট গুলি তৈরি হয় গামারি গাছের কাঠ ও আতা গাছের কাঠ দিয়ে।
প্লাস্টিকের ব্যাট থেকে শুরু করে টেনিস বল ব্যাট, ক্যামবিস বল ব্যাট, বিভিন্ন কম দামি ও বেশি দামের ব্যাটের সঙ্গে তারা বিক্রি করে থাকেন নানান খেলার সামগ্রী তবে সেগুলো সব কেনা তৈরি যাবতীয় ব্যাট। ১৩৫ টাকা থেকে শুরু করে তাদের কাছে ব্যাট রয়েছে ১০০০০ টাকা দামেরও। অনলাইনের মাধ্যমে করে থাকেন বিক্রি।
দোকানের কর্মচারী জানান, সাধারণত ক্রিকেট ব্যাটের সিজন থাকে জানুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। বর্ষাকালে ক্রিকেটের সিজন থাকে না বলে সেভাবে বিক্রি হয় না ক্রিকেট ব্যাট। তখন তাঁরা বিক্রি করে থাকেন ব্যাডমিন্টন, ক্যারামবোর্ড ইত্যাদি। তবে বর্তমানে তরুণ প্রজন্মরা মোবাইল ফোনে এতটাই ব্যস্ত যে মাঠে গিয়ে খেলাধুলো অনেকটাই ভুলতে বসেছে। সেই কারণে আউটডোর অর্থাৎ ক্রিকেট ফুটবলের মতো খেলা কমে গিয়ে থাকলেও যেহেতু তাদের পাইকারি ব্যবসা, তাই কম বেশি বিক্রি হয়।
বাবা চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস জানান, ছোটবেলা থেকেই ছেলেকে দেখতাম কাঠের কাজের প্রতি ঝোঁক রয়েছে। স্কুলে যাওয়ার আগে কাঠমিস্ত্রিদের কাজ সে মনোযোগ সহকারে দেখত। এর পর একটু যখন বড় হল তখন সে প্রথম বানায় দুটি কাঠের ফুচকার বাক্স। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই ব্যবসাতে চলে আসেন।
আরও পড়ুন- দুঃখের দশমী শেষে ‘কুম্ভ মেলা’য় মাতলেন আদিবাসী সম্প্রদায়! জানুন ‘এই’ মেলার বিশেষত্ব
বর্তমানে তিনটি দোকানে খেলাধুলার সমস্ত রকম সামগ্রী পাইকারি ও খুচরো বিক্রয় করা হয়। ফুচকার দোকান সামলেও বিশ্বজিৎ বাবুর বাবা চিত্তরঞ্জন বাবু ছেলেকে সাহায্য করতে দোকানে বসেন। কৃষ্ণনগরের বুকে ব্যাট তৈরি করেই বর্তমানে স্বনির্ভর বিশ্বজিৎ বাবুর পরিবার।