পুরুলিয়ার হুড়া ব্লকের দেউলী গ্রামের বাসিন্দা নমিতা সরকার। বয়স আনুমানিক ৫৭ বছর। বিগত দু-তিন মাস আগেই জানা যায় তিনি ক্যানসার আক্রান্ত হয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলেও রোগ মুক্তি হয়নি। কিন্ত গত মহালয়ার সপ্তাহে পুরুলিয়া দেবেন মাহাত সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের হাতওয়ারা ক্যাম্পাসে ডঃ পবন মন্ডলের কাছে আসেন তাঁরা। সেখানেই চিকিৎসক পবন মন্ডল তাঁদের বেশকিছু টেস্ট করানোর পরামর্শ দেন। সেই সমস্ত টেস্ট করানোর পর দুর্গাপুজোর সময় তাঁরা পুনরায় ডক্টর পবন মণ্ডলের কাছে রিপোর্ট দেখাতে আসেন।
advertisement
আরও পড়ুন : চাকরি অতীত! মেদিনীপুরের যুবকের দুর্দান্ত বিজনেস আইডিয়া, বাড়ির ছোট্ট জায়গায় করছেন ‘এই’ কাজ, আয় লক্ষ লক্ষ টাকা
রোগীর পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কোনও কিছুর পরোয়া না করেই ডক্টর পবন মন্ডল ও তার টিম সিদ্ধান্ত নেন তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচার করার। আর সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সদর ক্যাম্পাসের এমার্জেন্সি ওটিতেই ওই রোগীর অপারেশন করা হয়। প্রায় আড়াই ঘন্টার প্রচেষ্টায় রোগীকে ক্যানসার মুক্ত করেন চিকিৎসকেরা। এই অপারেশনে গলব্লাডারের পাশাপাশি লিভারের প্রায় ৪০০ গ্রাম অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে। গলব্লাডারের সঙ্গে থাকা লসিকা গ্রন্থিও বাদ দেওয়া হয়। জটিল এই অস্ত্রপচার চিকিৎসা ক্ষেত্রে বড়সড় সাফল্য বলেই মনে করছেন হাসপাতালে চিকিৎসকরা।
এই অপারেশনে ছিলেন ডক্টর পবন মন্ডল, ডক্টর মনিরুল ইসলাম, ডক্টর কার্তিক এস, ডক্টর সৌরভ সর্দার। অ্যানাস্থেসিয়া টিমের তরফ থেকে ছিলেন ডক্টর সন্দেশ রাঠোর ও সহযোগিতায় ছিলেন দুই শিফটের সিস্টাররা। বর্তমানে ওই রোগী পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সদর ক্যাম্পাসে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানেই রয়েছেন। তিনি এখন অনেকটাই সুস্থ রয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন : ২ পাড়ার বচসা, তুমুল ইটবৃষ্টি! এ কী কাণ্ড! হুলুস্থুল দক্ষিণ ২৪ পরগনায়, কেন ঘটল এমন ঘটনা?
এ বিষয়ে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি বলেন , চিকিৎসা ক্ষেত্রে কোনও রকম গাফিলতি তারা কখনোই করেন না। পুজোর সময় তাদের জরুরী পরিষেবা চালু ছিল। সেই সময় ডঃ পবন মন্ডল ও তার টিম যেভাবে ক্যানসার আক্রান্ত এই রোগীর চিকিৎসা করে তাঁকে সুস্থ করে তুলেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। সরকারি হাসপাতালে এইরকম চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে খুশি রোগীর পরিবারের সদস্যরা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এ বিষয়ে নমিতা দেবীর ছেলে শ্যামাপদ দত্ত বলেন , ডক্টর পবন মণ্ডল না থাকলে তিনি হয়ত তার মাকে হারিয়ে ফেলতেন। উনি ভগবানের মত করে ওঁনার মায়ের জীবনদান করেছেন। হাসপাতালে এই চিকিৎসা পরিষেবায় তিনি খুবই খুশি। সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন তিনি। উৎসবের সময়ে যখন সবাই ফেস্টিভ মুডে মেতে উঠেছিলেন, ঠিক সেই সময় পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত জেলা পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো গভমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অসাধ্য সাধন করেছেন। জটিল এই অস্ত্রপচার করে সকলের কাছে নজির গড়ে তুলেছেন তাঁরা।