গোটা রাজ্যের মানুষ যখন রঙের উৎসবে মাতোয়ারা, তখন মঙ্গলবার পাঁচটা দিনের মতোই স্বাভাবিক থাকবে বর্ধমান শহর। বর্ধমানে তখন অনুষ্ঠিত হবে রাজপরিবারের কুলদেবতার দোল। বর্ধমান রাজবাড়ির লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ মন্দিরের আবির মাখবেন রাধাগোবিন্দ জিউ। তাই এদিন রঙ খেলেন না বর্ধমানবাসী। তাঁরা রঙের উৎসবে মেতে উঠবেন পরদিন বুধবার। বর্ধমানে এই রীতি শতবর্ষ প্রাচীন। রাজা না থাক, সেই প্রথা থেকে গেছে পুরো মাত্রায়।
advertisement
বর্ধমানে দোল পূর্ণিমার পরের দিন পালন করা হয় দোল। পরের দিনই বর্ধমানবাসী মেতে উঠেন রঙ খেলার আনন্দে। বর্ধমান মহারাজার সময় থেকেই চলে আসছে এই রেওয়াজ। তার কারণ হিসেবে জানা যায়, রাজবাড়িতে রাধাগোবিন্দ জিউয়ের পুজো হতো দোলের দিন। সারাদিন পুজোর পরে আর রঙ খেলার সময় পাওয়া যেত না। সন্ধ্যা নেমে যেত।
তাই তখন একটা উপায় বার করা হয়েছিল। পরের দিন তো আর পুজো থাকবে না, তাই সেদিনই তাহলে রং খেলা হোক। সেই থেকেই চলে আসছে এই রেওয়াজ। রাজ নির্দেশেই বর্ধমানে দোলপূর্ণিমার দিনে খেলা হয় না রঙ। বরং তার পরের দিনই রঙ খেলার আনন্দে মাতেন আপামর বর্ধমানবাসী। সেই ঐতিহ্য আজও বহমান।
আরও পড়ুন : পাটকাঠি দিয়ে দেবদেবীর মূর্তি বানিয়ে সাড়া ফেললেন শিলিগুড়ির এই যুবক
বর্ধমান রাজবাড়ির পুরোহিত উত্তম মিশ্র জানালেন, " মহারাজ মহাতপ চাঁদের সময় থেকেই এই প্রথা চলে আসছে।দোল পূর্ণিমায় কুলদেবতারা দোল খেলেন। দেবতাদের পায়ে আবির দেওয়া হয়। আগে দোল উপলক্ষে ভিয়েন বসতো। লুচি মালপোয়া তৈরি হতো। অগণিত প্রজার মধ্যে সেই ভোগ বিলি করা হতো। এখন সেই আড়ম্বর নেই। তবে এখনও সন্ধ্যায় ভোগ নিবেদন করা হয়। দর্শনার্থীদের মধ্যে তা বিতরণ করা হয়।"
ইতিহাসবিদ সর্বজিত যশ বলেন," বর্ধমানের রাজ পরিবার লাহোর থেকে এসেছিল। দোল পূর্ণিমার দেবতার দোল হত। সেই রীতিই চলে আসছে। পরদিন রঙের উৎসবে মাতবেন বাসিন্দারা।"