পালা গানের আসর আর তেমন বসে না, হারিয়ে গিয়েছেন বহু শিল্পীও। তবু এখনও আশার আলো জ্বলছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঝড়খালীর বনবিবি নাট্য সংস্থার সদস্যদের মধ্যে। এই সংগঠনের শিল্পীরা নিজেদের সীমিত সামর্থ্য নিয়ে নিঃস্বার্থভাবে এই লোকগানকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। গ্রামের মাঠে, নদীর পাড়ে কিংবা উৎসবের মঞ্চে তাঁরা এখনও গেয়ে চলেছেন বনবিবির গান। যেখানে মিশে থাকে ভয়, বিশ্বাস আর ভালবাসার কাহিনি।
advertisement
আরও পড়ুনঃ ২২টি শাখা, দৈর্ঘ্য ৩৫ ফুট! ভারতের দ্বিতীয় উচ্চতম পেঁপে গাছের ‘বিরাট’ চেহারা, কোথায় হদিস মিলল জানেন?
এই সংস্থার প্রচেষ্টা শুধু এই শিল্পকে রক্ষা করাই নয় বরং এই ঐতিহ্য, ইতিহাস, এবং সুন্দরবনের সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখা। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ মূলত মৎস্যজীবীরা বনবিবিকে তাঁদের ধ্যান জ্ঞান মনে করেন। প্রতি বছর এই উৎসবে তাঁরা বাড়িতে নিরামিষ রান্না করেন। মহিলারা সবাই পান্তা ভাত খান। পাশাপাশি তাঁরা এক কাপড়ে থাকেন। তাঁদের স্বামী ও পুত্র জঙ্গলে মাছ , কাঁকড়া ও মধু সংগ্রহ করতে গেলে এই বনবিবির সামনে মাথা নত করে পুজো দেন তাঁরা। যতদিন না তাঁদের স্বামী, পুত্ররা বাড়ি ফিরছেন ততদিন বাড়িতে ধুমধাম করে সাজগোজ করে রান্নাবান্না হয় না। এই কটা দিন তাঁরা পান্তা ভাত খেয়ে মায়ের কাছে কাতর আবেদন জানান যে, ‘আমাদের স্বামী পুত্ররা যেন সুস্থভাবে ফিরে আসে’। এইভাবে বনবিবির কাছে তাঁরা পূজা অর্চনা করেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এই বনবিবির পুজো সুন্দরবন এলাকায় যথেষ্ট উদ্দীপনার সঙ্গে পালন হয়ে থাকে। পাশাপাশি বনবিবির শিল্পীরাও এই কটা দিন বিভিন্ন জায়গায় পালা গান গেয়ে বেড়ান। তবে এই শিল্পীদের অভিযোগ, সরকার তাঁদের ঠিকমতো সাহায্য করে না। সরকার যদি এগিয়ে এসে সুন্দরবনের লোকসংস্কৃতি শিল্পীদের দিকে একটু তাকায় তাহলে এই লোকসংস্কৃতি অর্থাৎ বনবিবির পালা সুন্দরবন এলাকায় অনেকদিন ধরে তাঁরা টিকিয়ে রাখতে পারবেন, এমনটাই তাঁদের বিশ্বাস।