প্রায় ২০ টি অস্থায়ী বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। ক্ষতিগ্রস্তদের আরও দাবি, তাঁদের বসবাস পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে। এমনকr তাঁদের পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকত্বের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড প্রভৃতি নথিও রয়েছে। এরপরেও আচমকা অভিযান চালায় বিহার পুলিশ ও প্রশাসন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। ওই এলাকা এই রাজ্যের বলে দাবি বিজেপি সাংসদেরও। বিহার পুলিশের অভিযানের ঘটনায় শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি তরজা। যে এলাকায় অভিযান ঘিরে বিতর্ক, সেখানকার জমি পশ্চিমবঙ্গ না বিহারের, তা খতিয়ে দেখছে মালদা প্রশাসন।
advertisement
আরও পড়ুন- সিউড়িতে এ বার চলবে রঙ ভিত্তিক টোটো! কেন এমন সিদ্ধান্ত প্রশাসনের?
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাঁরা এই রাজ্যের বাসিন্দা। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের সাদলীচক গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন সহরাবহরা এলাকার বাসিন্দা তাঁরা। কেউ ৪০ বছর, কেউ ৫০ বছর, কেউবা আরও বেশি সময় ধরে ওই এলাকায় বসবাস করছেন।
তাঁদের ঘরবাড়ির পেছনে স্থানীয় এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার জমি রয়েছে। এই জন্যই বিহার পুলিশ ও প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে তৃণমূল নেতার মদতে ভাঙচুর হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
ভাঙচুরের সময় বিহার পুলিশ ও প্রশাসনের দলের সঙ্গে স্থানীয়দের রীতিমতো বচসা হয়। বাধা দিতে গিয়ে কয়েকজনকে হেনস্তা হতে হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের বিরুদ্ধে জমি জবরদখল করে বসবাসের অভিযোগ রয়েছে বলে অভিযানের সময় দাবি করেন বিহার পুলিশ ও প্রশাসনের দল।
ভাঙচুর ও উচ্ছেদ অভিযানের ফলে বর্তমানে কার্যত নিরাশ্রয় অবস্থায় স্থানীয়রা। ঘটনার সুবিচার চেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
এদিকে, যে জায়গায় বিহার পুলিশের অভিযান ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক ওই এলাকা পশ্চিমবঙ্গের বলে একযোগে দাবি করেছে বিজেপি ও তৃণমূল। তবে উচ্ছেদের প্রশ্নে দুই দলের নেতৃত্বের মধ্যে শুরু হয়েছে চাপান-উতোর।
এলাকা পরিদর্শনের পর মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, ওই জমির পেছনে তৃণমূল নেতাদের জমি। ওরা বিহার প্রশাসনকে বুঝিয়েছেন ওই এলাকা বিহারের। এরপরই ওই অভিযান হয়। দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন বিজেপি সংসদ।
আরও পড়ুন- মাত্র ২৫ দিন আগে বিয়ে হয়েছিল, নববধূর সঙ্গে কী এমন হল! মারাত্মক...
এদিকে বিজেপি শাসিত বিহারের বিরুদ্ধে পাল্টা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো না মানার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, যাঁদের উচ্ছেদ করা হয়েছে সেই ভূখন্ড এবং বাসিন্দারা পশ্চিমবঙ্গের। অথচ অন্যায়ভাবে এলাকায় ঢুকে অভিযান চালিয়েছে বিহার পুলিশ।
মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, যে এলাকায় অভিযান নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে, সেই এলাকায় প্রাথমিক তদন্ত চালিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ এবং মালদহের প্রশাসন। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বিহার পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালায়। তবে, ওই জমি কোন রাজ্যের অন্তর্গত সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেওয়া হচ্ছে। রিপোর্ট তৈরির পর ওই জমির স্ট্যাটাস সম্পর্কে জেনে, পশ্চিমবঙ্গের এলাকা হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।