সত্যিই, বন্ধুত্বের শক্তি কতটা অসাধারণ হতে পারে, তার এক জীবন্ত উদাহরণ সরস্বতীর জীবনের এই ঘটনা।সংসারের অভাবে বাড়িতে জ্বলত না উনুনু। ছেলে মেয়েকে নিয়ে দুপুরে চলে যেতেন আশ্রমে একটু ভাত পাওয়ার আশায়। এক বান্ধবীর কথা শুনে শুরু করেন নাট্য দলের কর্মীদের টিফিন দেওয়ার কাজ। যা আজ তার জীবন বদলে দিয়েছে। হয়ে উঠেছে রুজিরোজগারের প্রধান মাধ্যম।
advertisement
আরও পড়ুন : হেতমপুরের রাজার সভাকবি ছিলেন, ছিল বিশাল সম্পত্তি! সাধক কবির বাড়ি আজ মিউজিয়াম, টুক করে ঘুরে আসুন
পূর্ব বর্ধমানের সরস্বতী দত্ত। ভালবেসে বিয়ে করা মেনে নেয় নি শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ঢুকতে দেয় নি বাড়িতে। তারপর থেকে ২৮ বছর কেটেছে ভাড়া বাড়িতে। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় সংসারের হাল ধরেন তিনি। প্রথমে সেলাইয়ের কাজ শুরু করলেও সংসার চালাতে পারছিলেন না, পরে বিউটিশিয়ান কোর্স করেন। কিন্তু তাতেও ব্যর্থ হন তিনি। পরে এক বান্ধবীর কথায় শুরু করেন নাট্য দলের কর্মীদের জন্য টিফিন দেওয়ার কাজ। পাশাপাশি নাট্যমঞ্চের বাইরে সাইকেলে করে ঘুগনি, আলুর দম বিক্রি করার ব্যবসা শুরু করেন।
আরও পড়ুন : প্রতিটি বাড়িতে প্রয়োজন দু’বেলা! সেই ব্যবসায় হাত পাকিয়েছে দাসপুর, চাহিদা মেটাতে গিয়ে নাজেহাল কারিগররা
শুরু হয় জীবনের নতুন অধ্যায়। নাট্য উৎসব না থাকলে সেই দিনগুলিতে সাইকেল নিয়ে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতে থাকেন আলুর দম ও ঘুগনি। পরে একটি ভ্যান বানিয়ে উল্লাস এলাকায় আজ ১১ রকমের খাবার তৈরি করে চলছে ব্যবসা। আর মাকে সাহায্য করছে তার ছেলে। তিনি বলেন, বিশেষভাবে সক্ষম হলেও আমার ব্যবসার প্রথম থেকেই ছেলে আমার সঙ্গী। প্রথম প্রথম পাশে দাঁড়িয়ে দেখত। বুঝতে পারত না কী করবে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
কিন্ত এখন ব্যবসায় সাহায্য করে। আমার এক মেয়েও আছে। এই ভ্যান আমার স্বপ্নের গাড়ি, যা বদলে দিয়েছে জীবন। আজ আগের থেকে অনেক ভাল আছি। সংসারের অভাব মেটানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন। বারবার ব্যর্থ হয়েও তিনি হাল ছাড়েননি। তাঁর অদম্য চেষ্টা, দৃঢ় মনোবল আর হার না মানার মানসিকতা আজ তাঁর জীবন বদলে দিয়েছে। যা হাজারো মানুষকে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখাবে।