ইব্রাহীম শেখের স্ত্রী তারিফুন্নেসা বিবি বলেন, “আমার স্বামীকে আটক করা হয়েছিল, কিন্তু এখন ছেড়ে দিয়েছে। তবে ওদের বাড়ি আসতে দেবে না। ওদের আবার ডাকতে পারে। কিন্তু আমার স্বামী তো পশ্চিমবঙ্গের লোক বাংলাদেশি নয়, তাহলে এরকম কেন হচ্ছে! ওখানে ওরা খুব চিন্তায় আছে। আমি চাই ঘরের মানুষ ঘরে ফিরে আসুক।” অভিযোগ, ওড়িশার বিজয়নগর ও ঝাড়সুগুদা থানার পুলিশ শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে তাঁদের সন্দেহভাজন দাবি করে তুলে নিয়ে যায়। আধার কার্ড বা ভোটার আইডি থাকা সত্ত্বেও জন্ম সনদ না থাকায় তাঁদের ‘বিদেশি’ তকমা দিয়ে স্কুল ও ক্লাব ঘরে পাঁচদিন ধরে আটকে রাখা হয়। শ্রমিকদের দাবি, তাঁদের ঠিকমতো খেতে দেওয়া হয়নি, এমনকি ব্যাপকভাবে গালিগালাজও করা হয়েছে। চর সুজাপুরের শ্রমিক নুরশেদ শেখ ফোনে জানিয়েছেন, এখন তাঁদের ছেড়ে দিলেও বাড়ি ফিরতে দিচ্ছে না।
advertisement
থানায় ডেকে নানা কাগজে নাকি জোর করে সই করানো হচ্ছে। আরেক শ্রমিক আব্দুল হাবিব শেখ জানান, তাঁদের কোনও কাজ করতেও দেওয়া হচ্ছে না, থানায় ডেকে ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রেখে হয়রানি করছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার মৌগ্রাম পঞ্চায়েতে পৌঁছান কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহানাওয়াজ। শ্রমিকদের পরিবার বিধায়ককে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিধায়ক তাঁদের হাতে আর্থিক সাহায্য ও একটি করে শাড়ি তুলে দিয়েছেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে।
এই বিষয়ে বিধায়ক শেখ শাহানাওয়াজ বলেন, “পেটের দায়ে মানুষ বাইরে কাজে যায়। ভিন রাজ্যের অনেকেই আমাদের বাংলায় কাজ করেন। কিন্তু বাংলার শ্রমিকদের যেভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, এটার জন্য আমি তীব্র প্রতিবাদ এবং ধিক্কার জানাচ্ছি।” এই ঘটনার পর গ্রামে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়েছে ব্যাপকভাবে। পরিবারের সদস্যরা উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, কবে প্রিয়জনরা ফিরতে পারবেন, সে নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।
—- বনোয়ারীলাল চৌধুরী