বর্তমানে উষ্ণায়নের ফলে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর ক্রমশই নিম্নমুখী। বিভিন্ন সমীক্ষায় উঠে এসেছে, এই দিক থেকে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাত বর্তমানে অরেঞ্জ জোনে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, জল সংরক্ষণে সচেতন পদক্ষেপ না নিলে ২০৫০ সালের মধ্যে বারাসাত রেড জোনে চলে যেতে পারে। তাতে দেখা দেবে তীব্র জল সংকট, বিপন্ন হবে পরিবেশের ভারসাম্য।
advertisement
আরও পড়ুনঃ জাতীয় সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, বিকট শব্দ, আহতদের চিৎকার…! ঘটনাস্থলেই মৃত ১, গুরুতর জখম ৭
এই পরিস্থিতিতে জল অপচয় রুখে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর ঠিক রাখতে অভিনব এক পদক্ষেপ নিয়েছে বারাসাত পৌরসভা। পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণপুর এলাকায় প্রায় এক হাজার ফুট দীর্ঘ পরিবেশবান্ধব নিকাশিনালা তৈরি করা হচ্ছে। আর দশটা সাধারণ নিকাশি নালার মতো হচ্ছে না এই ড্রেন। বরং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে এই নিকাশি নালা থেকেই জল পৌঁছে যাবে ভূগর্ভে।
কংক্রিটের তৈরি নিকাশি নালার থেকে এই ড্রেনের জল শোষণের ক্ষমতা থাকবে অত্যাধিক মাত্রায়। ফলে ড্রেনের কোথাও জল দাঁড়াবে না। তা শুষে নিয়েই ভূগর্ভে পৌঁছে দেবে ড্রেনের ১০ ফুট অন্তর বসানো বিশেষ পাইপ। বহুসময় দেখা যায়, প্লাস্টিক ও জঞ্জাল আটকে নর্দমার মুখ আটকে গিয়েছে। সেই সমস্যা সমাধানেই ভাবনাচিন্তা শুরু করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ প্রশাসনের কর্তারা। এরপর ঠিক হয়, কংক্রিটের নর্দমা তৈরির মাঝেই ১০ ফুট অন্তর ফাঁকা রাখা হবে মাটির অংশ। সেই অংশই জল শুষে নেবে।
আরও পড়ুনঃ অধ্যাপককে শাসানির অভিযোগ! অভিযুক্ত নেতাকে ‘সার্টিফিকেট’, উল্টে বিজেপি-সিপিএমকে আক্রমণ বিধায়কের
পরবর্তীতে সেই স্থানগুলিতেও প্লাস্টিক সহ জঞ্জাল জমা হতেই বিকল্প ভাবনার কথা শুরু হয়। এরপর, পাইপ আউটলেটের মাধ্যমে চারকোল ফিল্টার বসিয়ে ড্রেনের জলকে পরিশোধন করে ভূগর্ভে পাঠানোর পরিকল্পনা মাথায় আসে। যেখানে নর্দমার মাঝে ১০ ফুট অন্তর এক বিশেষ পাইপ বসানো হচ্ছে। এর মুখ যাতে বন্ধ না হয়ে যায় সেই জন্য চারকোল দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে অপচয় হওয়া জল পুনরায় ভূগর্ভস্থ স্তরে পৌঁছে যেতে পারবে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তথা চিকিৎসক সুমিত কুমার সাহা বলেন, কংক্রিটের জঙ্গলে মাটি হারিয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির জল মাটির তলায় প্রবেশ করতে পারছে না। নতুন এই প্রযুক্তির ফলে জল সংকট কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা। প্রায় ৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে পৌরসভা। অর্থ ব্যয়ের নিরিখে সফল হলে ভবিষ্যতে অন্যান্য ওয়ার্ডেও একইভাবে পরিবেশবান্ধব এই নিকাশিনালা তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
স্থানীয় মানুষজন জানান, এলাকায় জল জমার যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল এই পদ্ধতিতে তা অনেকটাই মিটবে বলেই মনে হচ্ছে। এখন দেখার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে তৈরি এই অভিনব নিকাশি নালা জল শোষণে কতটা ফলপ্রসূ হয়।