পাশাপাশি, নাচ ও সাজসজ্জার প্রতিও ছিল তাঁর গভীর টান। তখনই মেকআপের জগতে হাতেখড়ি। বন্ধুদের নিয়ে সমাজসেবামূলক কাজ, নিজের হাতে রান্না করে অন্যদের খাওয়ানো এইভাবেই জীবনের রঙিন অধ্যায় কাটছিল। কিন্তু ২০২১ সালের দোলের আগের দিন ঘটে গেল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা। চোখে রং ঢুকে ধীরে ধীরে তিনি হারিয়ে ফেলেন তার দৃষ্টিশক্তি।
advertisement
চিকিৎসকেরা জানান, আকস্মিক আঘাতের ফলে রেটিনা ডিটাচমেন্ট হয়েছে। বহু জায়গায় চিকিৎসা, একাধিক অপারেশন করেও মেলেনি কোনও স্থায়ী সমাধান। সেই সময় চারদিকে নেমে আসে অন্ধকার শুধু চোখেই নয়, মনের ভেতরেও। যে বাড়ি একসময় মানুষের আনাগোনায় মুখর ছিল, তা হয়ে যায় নিঃসঙ্গ। কিন্তু বন্ধুত্ব তখনই সার্থক হয়ে ওঠে। পাশে দাঁড়ান তাঁর স্কুলজীবনের বন্ধু দেবাশিস ঘোষ। বন্ধুর সাহচর্যে, ধীরে ধীরে হতাশা কাটিয়ে মেকআপ ব্রাশ আবার তুলে নেন অসিত। আজ, চোখ না থেকেও অসিতের স্পর্শে জেগে ওঠে রূপ।
আরও পড়ুনঃ সুগার বলে ভাত বন্ধ? নো টেনশন! শুধু এই ৫ পদ্ধতিতে রান্না করলেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়বেটিস
কনের সাজ, ফেস ট্রিটমেন্ট, হেয়ার স্টাইলিং সবই করেন নিখুঁতভাবে। তাকে সাহায্য করে পাড়ার এক ভাইঝি ও দুই ছাত্রী। কিন্তু সবকিছুর উর্ধ্বে যিনি প্রতিটি মুহূর্তে আছেন তার পাশে, তিনি হলেন অসিতের মা। এই বয়সেও তিনি বাজারে বসে সবজি বিক্রি করেন, শুধু ছেলের চিকিৎসা আর সংসার চালানোর জন্য। তাঁর একটাই আশা একদিন হয়তো তাঁর ছেলে আবার দেখতে পাবে, ফিরে পাবে হারানো আলো। তবে, আলো ফিরে আসুক বা না আসুক অসিত আজ নিজেই বহু মানুষের অনুপ্রেরণা। কারণ তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, শরীরের সীমাবদ্ধতা কখনও মনকে থামাতে পারে না। আত্মবিশ্বাস, ভালোবাসা আর লড়াই এই নিয়েই অসিত বিশ্বাসের জীবনের গল্প ৷
সুমন সাহা