হাওড়ার প্রীতম মেদ্দা হুইলচেয়ারে চড়ে হাওড়া থেকে তারকেশ্বর যাত্রা করেছেন। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তারকেশ্বরের মন্দিরে পৌঁছান, যা ভক্তির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই যাত্রাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কারণ প্রীতম মেদ্দা কোমর থেকে পা অসাড় হওয়া সত্ত্বেও হুইলচেয়ারে করে ৩৫-৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছেন, তাঁর এই যাত্রা অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা।
আরও পড়ুনঃ ‘১০ বছর আগের আমিটাকে আবার দেখতে পেলাম…!’ ধূমকেতু ছবির গানের লঞ্চে বললেন অনুপম রায়
advertisement
কয়েক বছর আগে গাছ থেকে পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডে সাংঘাতিক চোট পেয়ে জীবনের অর্থটা বদলে গিয়েছিল প্রীতমের কাছে। তার পরেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। অংশ নিয়েছেন একের পর হুইলচেয়ার ম্যারাথনে। প্রতি ক্ষেত্রেই সফল তিনি। কোমরের নীচ থেকে পা পর্যন্ত অসাড়। বহু চিকিৎসাতেও কোন ফল হয়নি। এহেন পরিস্থিতিতে রোজকার জীবনে হুইল চেয়ারই সঙ্গী ডোমজুড়ের প্রীতমের। তবে হুইল চেয়ারে বসে থেকে একের পর এক প্রতিযোগিতায় পাহাড় প্রমাণ সাফল্য ছিনিয়ে এনে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ডোমজুড়ের দফরপুর বেলাল পাড়ার এই যুবক। এরপরের লক্ষ্য জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া।
আর পাঁচ জনের মত প্রীতমের প্রবল ইচ্ছা জাগ্রত তারকেশ্বরের তারকনাথ এর কাছে পৌঁছে বাবার মাথায় জল ঢালবে। আগেও নিজের ইচ্ছা পূরণে শ্রাবণ মাসে হুইল চেয়ারে করে তারকেশ্বরে গেছিল প্রীতম। এই বছরও তার অন্যথা হল না। অবশেষে সেই ইচ্ছে পূরণ, কষ্ট হলেও ইচ্ছে পূরণ করতে পেরে বেজায় খুশি প্রীতম।
তবে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার হুইল চেয়ারে পাড়ি দিয়ে তারকেশ্বরের বাবার কাছে পৌঁছানো একটা অন্য অভিজ্ঞতা। কষ্টের মধ্যে দিয়েও রয়েছে আনন্দ। আগামী দিনে এভাবেই বাবার কাছে পৌঁছতে চায় প্রীতম।
২০২১ এ প্রথম ম্যারাথনে অংশ নিয়েই সাফল্য আসে প্রীতমের |তারপর থেকে একে একে ১৪-১৫টির বেশি ম্যারাথনে অংশ নিয়ে কোথাও দ্বিতীয় কোথাও তৃতীয় স্থান অধিকার করি | এখন লক্ষ্য জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া। মনের জোরকে সম্বল করে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের স্বপ্ন দেখে প্রীতম। বাবা চাষের কাজ করেন, সেভাবে আর্থিক স্বচ্ছলতা নেই পরিবারে |হুইল চেয়ার নিয়ে ট্রেনে বাসে চেপে ম্যারাথনের যোগ দিতে একাই পৌঁছে দেশের নানান প্রান্তে। এই মনের জোর প্রীতমের মতো হাজার হাজার শারীরিক প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মানুষের কাছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
রাকেশ মাইতি





