ভদ্রেশ্বর তেলিনি পাড়া হাই স্কুল। দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে স্কুলের সমস্ত বিপদ-আপদে তাকে আগলে ধরে রেখেছিলেন বছর ৭৩ এর প্রৌঢ় ঘনশ্যাম থাপা। ১৯৭৬ এর নেপাল থেকে এসেছিলেন কাজের সন্ধানে হুগলির ভদ্রেশ্বরে। দৈনিক ৭৫ টাকা মজুরিতে তিনি কাজ করে গেছেন সারা জীবন অস্থায়ী কর্মী রূপে। প্রথম দিকে স্কুলের তরফেও অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল যাতে তার চাকরিটি পার্মানেন্ট হয়। কিন্তু সকল চেষ্টাই বৃথা হয়। পরবর্তীতে স্কুলকে ভালবেসে নিজের কর্মজীবন কাটিয়ে গেছেন টাকা পয়সার কথা চিন্তা না করেই। স্কুলের সকলের পছন্দের ঘনশ্যাম থাপা ওরফে বাহাদুর-দা।
advertisement
আরও পড়ুন: শীতের পিকনিকে গড় মন্দারণে মিলছে না সঠিক পরিষেবা, মন খুশি নেই পর্যটকদের
নিজের কর্মজীবনে মাত্র কয়েকবারই ছুটি নিয়ে তিনি বাড়ি গিয়েছিলেন। শেষবার ২০০২ সালে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে নেপাল গিয়েছিলেন মায়ের মৃত্যুতে। এবার স্কুল ছেড়ে পুরোপুরিভাবে চলে যাওয়ার পালা। শেষ দিনের বিদায় বেলায় সকলের প্রিয় বাহাদুর দাকে শেষ বিদায় জানাতে স্কুলে উপস্থিত হয়েছিল স্কুলের বিভিন্ন সময়ের প্রাক্তন ছাত্ররা। দীর্ঘ ৪৮ বছরের কর্মজীবনের পরেও অস্থায়ী কর্মী থাকার দরুন কোনো রকম সরকারি সাহায্য মেলেনি ঘনশ্যামের তবে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী থেকে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা সকলেই এসে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাহাদুরের। শেষ বেলায় চোখের জলেই স্কুল থেকে বিদায় জানালেন বছর ৭০ ঊর্ধ্ব নেপালী গার্ড ঘনশ্যাম থাপা।
আরও পড়ুন: বেহাল অবস্থায় অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে রান্নাবান্না থেকে পড়াশোনা
স্কুলের চাকরি ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার সময়, ঘনশ্যাম থাপার মন খারাপ। তার কথায়, জীবনের ৪৮ টা বছর তিনি কাটিয়েছেন এই স্কুলের সঙ্গে। স্কুলের ভালো মন্দ অঘটন, উৎসব সবের সাক্ষী তিনি। স্কুলকে ভালোবেসেই স্কুলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। এইসব ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার দিনে তার নিজের মনও খুব খারাপ।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
বয়সের চাপে এখন তিনি বৃদ্ধ তবে স্কুলের প্রতি তার অটুট ভালোবাসা এবং ছাত্রদের প্রতি তার স্নেহ সেই কথাই মনের ধরে রেখে কাটাবেন বাকি জীবন টুকু।
রাহী হালদার