এর আগেও তাঁর ঝুলিতে ছিল একাধিক জেলা ও রাজ্য স্তরের পুরস্কার। এমনকি তিনি ন্যাশনাল মেরিট অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন। তবে এবছর রাষ্ট্রপতির হাত থেকে সরাসরি জাতীয় স্তরের পুরস্কার প্রাপ্তি তাঁর দীর্ঘ শিল্পী জীবনের এক অনন্য মাইলফলক বলেই মনে করছে শিল্প মহল।
advertisement
শিল্পী শিব শংকর সাঁধুখা
পেপার পাল্প বা কাগজের মণ্ড তৈরির পদ্ধতিও ব্যতিক্রমী। পুরনো, বাতিল কাগজ জল দিয়ে ভিজিয়ে নরম করে তা ভালভাবে চিপে কাদার মতো উপাদান তৈরি করা হয়। এরপর তার সঙ্গে আঠা মিশিয়ে তৈরি হয় এমন এক মাধ্যম, যা দেখতে মাটির মতো হলেও শুকিয়ে গেলে অত্যন্ত শক্ত হয়। একই সঙ্গে মাটির তুলনায় ওজন অনেকটাই হালকা হওয়ায় বড় আকারের শিল্পকর্ম তৈরি করাও তুলনামূলক সহজ হয়।
এই কাগজের মণ্ড দিয়েই শিব শংকর সাঁধুখা তৈরি করেছেন একের পর এক অনবদ্য শিল্পকর্ম। দেবদেবীর মূর্তি, জীবজন্তু, থালা-বাসন থেকে শুরু করে নানা রকম নান্দনিক মডেল সবই তাঁর শিল্পীসত্ত্বার পরিচয় বহন করে। এর আগে তিনি তৈরি করেছেন বড় আকারের কুমির, চৈতন্যদেব ও বুদ্ধদেবের মূর্তি, গণেশ, অশোক স্তম্ভ, নৃসিংহদেবের মূর্তি, ফুলদানি এবং বিভিন্ন বনসাই মডেল।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তবে যে শিল্পকর্মটির জন্য তিনি জাতীয় পুরস্কারে নির্বাচিত হয়েছেন, সেটি হল ‘ইন্ডিয়ান ওয়াটার সেভিং উইম্যান’। জল সংরক্ষণের সামাজিক বার্তা তুলে ধরা এই মডেলটি প্রতিযোগিতায় পাঠানোর পর বিচারকমণ্ডলীর বিশেষ নজর কাড়ে। বিষয়বস্তু, ভাবনা ও শিল্পনৈপুণ্যের জন্য সেটিকেই সেরা মডেল হিসেবে বিবেচনা করে ভারত সরকার। আর তার ফলেই আসে জাতীয় সম্মান।
শিব শংকর বাবু জানান, বর্তমানে তাঁর কাছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি দিল্লি, বেঙ্গালুরুর মতো শহর থেকেও অর্ডার আসছে। পছন্দমতো নকশা ও মডেল তৈরি করে দেওয়ার সক্ষমতা তাঁর রয়েছে। বিভিন্ন মেলা ও প্রদর্শনীতে তিনি এই শিল্পকর্ম বিক্রি করেন। এছাড়াও বাড়ি থেকেই অনলাইন মাধ্যমে পাইকারি ও খুচরো বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, প্রথমে শখের বশে শুরু হলেও আজ এই শিল্পই তাঁর নেশা এবং পেশা দু’টোই হয়ে উঠেছে। নবদ্বীপের এই শিল্পীর সাফল্য আগামী দিনে আরও অনেক তরুণ শিল্পীকে অনুপ্রাণিত করবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।





