অনব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে এমনই গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন বীরভূমের দুই ব্যবসায়ী অরূপ ভট্টাচার্য এবং প্রবীর মণ্ডল৷ ওই দুই ব্যবসায়ীর বীরভূমে গাড়ির ব্যবসা রয়েছে৷
আরও পড়ুন: অনুব্রতর রাইস মিলের ডিরেক্টর বাড়ির পরিচারক! ভোলে ব্যোমে চমকে দেওয়া তথ্য
অরূপ বাবুর অভিযোগ, ২০১৭ সালে বন্যা সমস্যা মেটানোর জন্য বীরভূমের তৎকালীন জেলাশাসক তিলপাড়া বাঁধ এবং জলাধার সংস্কারের উদ্যোগ নেন৷ সেই কাজের জন্য আবেদন জানান অরূপ বাবু ও তাঁর ব্যবসায়িক সঙ্গী প্রবীর মণ্ডল৷ অরূপ ভট্টাচার্যের কথায়, 'জেলাশাসক অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন৷ বন্যা মোকাবিলায় উনি তিলপাড়া জলাধার সংস্কারের উদ্যোগ নেন৷ উনিই আমাকে অনুরোধ করেছিলেন যাতে এই কাজটা আমি করি৷ কিন্তু কলকাতা থেকে অনেক চেষ্টা করেও কাজের জন্য তিনি অনুমোদন আনতে পারেননি৷ শেষ পর্যন্ত অনুব্রত মণ্ডলের শরণাপন্ন হই৷ উনি সহজেই সেচ দফতর থেকে এনওসি বের করে দেন৷ কাজের ওয়ার্ক অর্ডারও বেরিয়ে যায়৷ এর বদলে আমার কাছ থেকে দশ কোটি টাকা চাওয়া হয়৷ আমি বলেছিলাম অত টাকা দিতে পারব না৷ শেষ পর্যন্ত ৫ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা দিই৷ আর আমার ব্যবসায়িক পার্টনারের ৪৬ লক্ষ টাকা দামের গাড়িও চেয়ে নেন অনুব্রত মণ্ডল৷'
advertisement
ওই ব্যবসায়ীর আরও চাঞ্চল্যকর দাবি, 'অনুব্রত মণ্ডলের হাতেই আমি ওনার বাড়ির অফিসে বসে দেড় কোটি টাকা দিয়েছি৷ বাকি টাকা দিয়েছিলাম সায়গল হোসেনের হাতে৷ সব টাকা নগদে দিয়েছি৷ আবার ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের সময় আড়াই কোটি টাকা নিয়েছে৷'
আরও পড়ুন: আমার সব শেষ...! 'মায়ের খাবার-ওষুধ যোগাচ্ছে কে?' জেলে বসে সঙ্কটের কালো মেঘ অর্পিতার চোখে
যদিও দুই ব্যবসায়ীর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, এত টাকা দেওয়ার পরেও শেষ পর্যন্ত বাঁধ সংস্কারের কাজের বরাত তাঁরা পাননি৷ পরে সেই কাজ ঝাড়খণ্ডের অন্য ব্যবসায়ীদের দিয়ে দেওয়া হয়৷ কাজের বরাত পেতে যে টাকা দেওয়া হয়েছিল, সেই টাকাও তাঁরা ফেরত পাননি৷ অনুব্রতর রাইস মিলের গ্যারেজে যে ফোর্ড এন্ডেভার গাড়ি মিলেছে, সেটি রয়েছে প্রবীর মণ্ডলের নামে৷ ওই ব্যবসায়ী বলেন, 'আমরা পুরো শেষ হয়ে গিয়েছি৷ আর ব্যবসা করার মতো পুঁজিও নেই৷ বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ওই গাড়ি অনুব্রত মণ্ডলকে দিয়েছিলাম৷ পরে ফেরত চাইতে গাঁজা কেেস ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান৷ বলেছিলেন, গাড়ি চড়বি না জেলে যাবি?' প্রবীর বাবুর কথায়, এর পরে আর গাড়ি ফেরত চাওয়ার সাহস দেখাননি তিনি৷
যে ফোর্ড এন্ডেভার গাড়ি নিয়ে বিতর্ক, সেটিতে চড়ে কলকাতাতে আসতেও দেখা গিয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে৷ গাড়ির নম্বর WB54U 6666৷ গাড়ির গায়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্টিকারও মারা রয়েছে৷ রাইস মিলের গ্যারেজে থাকা আরও একটি গাড়িতে লাল বাতি লাগানো ছিল৷ ওই গাড়িটিও চড়তেন অনুব্রত৷ তবে এর কোনওটিই অনুব্রতর নামে ছিল না৷