যেহুতু জঙ্গলে ঘেরা এলাকা তাই প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়েই অর্থ উপার্জন করে জীবন জীবিকা অতিবাহিত করেন কিছু স্থানীয় মানুষ। তবে শুধু পুরুষরা নয়, স্থানীয় মহিলারাও এই কাজে যুক্ত রয়েছেন। গ্রামবাসী শ্রীদেবী বাউরি বলেন, “বিয়ের পর এখানে এসেই এই ঝাড়ু তৈরির কাজ শিখেছি। স্বল্প কিছু রোজগারও হয়। মাঝে মধ্যে পাতা কেটে আনার জন্য আমদেরকেও যেতে হয়। এখানকার অনেক মহিলাই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত।”
advertisement
আরও পড়ুন: নদীর ধারে পড়ে ওটা কী! কাছে যেতেই জ্ঞান হারানোর অবস্থা স্থানীয়দের, খবর পেয়েই ছুটে এল পুলিশ
জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে খেজুর গাছের পাতা কেটে সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে হয়। তারপর সেই পাতা ভাল করে কেটে বাছাই করে নেওয়া হয়। এরপর সেই পাতাগুলোকে সারিবদ্ধ ভাবে রাস্তার মধ্যে পেতে দেওয়া হয় রোদে শুকানোর জন্য। শুকিয়ে গেলে বিভিন্ন পদ্ধতিতে তৈরি হয় ঝাড়ু।প্রতিটি ঝাড়ু তাঁরা বিক্রি করেন মাত্র ২০ থেকে ২৫ টাকায়। সামান্য দাম হলেও, তাতেই বেঁচে থাকে তাঁদের স্বপ্ন, টিকে থাকে সংসার। চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও এই ঝাড়ু তৈরির কাজ তাঁদের কাছে বাড়তি আয়ের ভরসা, জীবনযাত্রা সচল রাখার লড়াই। গ্রামবাসী নবকুমার বাউরি বলেন, “এইগুলো আমরা সাইকেলে করে ঘুরে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করি। বহু বছর ধরে এই কাজ করছি। গলসি, পারাজ সহ নানান জায়গায় বিক্রি করি। এই ঝাড়ু তৈরিতে অনেক পরিশ্রমও করতে হয়।”
আরও পড়ুন: চাকদহে ডাকাতি কাণ্ডে বড় সাফল্য! বিপুল পরিমাণ সোনার গয়না উদ্ধার করল পুলিশ
এই ঝাড়ু কেবল বাজারে বিক্রি হওয়া জিনিস নয়, এর ভেতরে মিশে আছে প্রকৃতিকে কাজে লাগিয়ে বেঁচে থাকার জেদ, অভাবের মাঝেও শিল্পের প্রতি ভালবাসা। প্রতিটি ঝাড়ুর মধ্যে লুকিয়ে থাকে সংগ্রামের কাহিনি, আর গোপনে লেখা থাকে গ্রামীণ জীবনের যেন এক অনন্য কাব্য। জঙ্গলমহলের এই গ্রাম তাই আজও বাঁচিয়ে রেখেছে এক বিশেষ শিল্পকে। খেঁজুর পাতার ঝাড়ু শুধু জীবিকা নয়, ভালকি গ্রামের মানুষের কাছে আত্মমর্যাদা, ঐতিহ্য আর পরিশ্রমের প্রতীক।