শুক্রবার মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল বার হতেই সকাল থেকে নিজের ঘরেই কেঁদে চলেছে অস্মিতা । সমানে বলছে, ‘‘বাবা বলেছিল একসঙ্গে রেজাল্ট আনতে যাবে। বাবা কোথায় চলে গেল ? কেন আসছে না ?’’ ছোট্ট মেয়ের অবুঝ মন আর যেন কোনও কথাই মানছে না। মা স্বপ্না সাহাও কিছুতেই মেয়ের মুখোমুখি হয়ে আশ্বস্ত করতে পারছেন না। আর কী-ই বা বলবেন! দীর্ঘ প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গেল সাহা পরিবারে । এখনো দীপেশ সাহার কোনও খবর দিতে পারেনি প্রশাসন ।
advertisement
অস্মিতার মা স্বপ্নাদেবী জানান, ‘‘অশোকনগরের আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় থেকেই মাধ্যমিক পাশ করেছে অস্মিতা । সংসারে আর্থিক টানাটানি থাকলেও মেয়ের পড়াশোনায় কোনও খামতি রাখতেন না বাবা দীপেশ সাহা । কলা ও বিজ্ঞান বিভাগের জন্য দু’জন শিক্ষক এবং ইংরেজি ও অঙ্কের জন্য আলাদা শিক্ষক রেখেছিলেন । আজ তিনি যেখানেই থাকুক, তাঁর সেই চেষ্টা বিফলে যায়নি । ভালই ফল করেছে অস্মিতা । কিন্তু জানি না আবার কবে তাঁকে সামনাসামনি দেখতে পাবো-এখন সেটাই সবথেকে বড় চিন্তার।’’
আরও পড়ুন : ঘরের কাছে আরশিনগর! ছোট্ট বিরতিতে বেড়াতে আসুন মেদিনীপুরে ‘পাণ্ডবদের অজ্ঞাতবাস’-এ
আরও পড়ুন : বীমাকর্মী বাবার সামান্য উপার্জনই ভরসা, মেধাবী অপূর্ব মাধ্যমিকে সপ্তম
এখন স্বপ্নাদেবী ও অস্মিতার একটাই লক্ষ্য, যে ভাবেই হোক দীপেশবাবুকে খুঁজে বার করে, বাড়িতে ফিরিয়ে আনা। স্বপ্নাদেবী জানান, এ বার তিনি নিজে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন । ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে অশোকনগর থানার আধিকারিকের সঙ্গেও কথা বলেছেন বলে জানান । মেয়ে অস্মিতা বলেন, ‘‘দু’জন লোক নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন আর কারওর কোনও মাথাব্যথা নেই । পুলিশও কিছু বলতে পারছে না বাবার ব্যাপারে । বাবা ছোট থেকেই স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আসত৷ আজ রেজাল্ট আনতে গিয়ে বাবার কথা খুব মনে পড়ছে। আমি চাই যে ভাবেই হোক আমার বাবাকে খুঁজে বার করে দিক প্রশাসন।’’
(প্রতিবেদন- রুদ্র নারায়ণ রায়)