Weekend Tour: ঘরের কাছেই আরশিনগর! ছোট্ট বিরতিতে বেড়াতে আসুন মেদিনীপুরে ‘পাণ্ডবদের অজ্ঞাতবাস’-এ

Last Updated:

Weekend Tour: মহাভারতে উল্লিখিত গোপগড় বিরাট রাজ্যের অংশ ছিল। তাই স্থানটির পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য দর্শনার্থীদের অনুরোধ করা হচ্ছে। গোপগড়ে রয়েছে রাত্রি যাপনের জন্য কয়েকটি কটেজ।

+
প্রাসাদের

প্রাসাদের সামান্য ধ্বংসাবশেষ রয়েছে

মেদিনীপুর: কোলাহল, হইহুল্লোড় থেকে একটু নির্জন নিরিবিলি পরিবেশে একদিনের জন্য ঘুরে আসতে চাইলে অনায়াসেই যেতে পারেন মেদিনীপুর শহর থেকে মাত্র ৫ কিমি দূরে গোপগড় ইকো ট্যুরিজম পার্কে। মেদিনীপুর শহরের অন্যতম ইতিহাস চর্চাকারী ও আইনজীবী তীর্থঙ্কর ভকত বলেন, ‘‘এই গোপগড়ের যেমন ইতিহাস রয়েছে, তেমনই রয়েছে নানা লোককথা। শোনা যায়, মহাভারতের যুগে এটি ছিল বিরাট রাজার রাজ্য। চারিদিকে জঙ্গলে ঘেরা উচুঁ টিলার উপর প্রাসাদ ছিল বিরাট রাজার। স্থানীয় লোকমুখে প্রচলিত, মহাভারতের সময়কালে কৌরবদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পান্ডবরা এই বিরাট রাজার রাজ্যে অর্থাৎ গোপগড়ে এসে আত্মগোপন করেছিলেন।’’
এই লোককথা গোপগড় গেলেই চোখে পড়বে বোর্ডের লেখা থেকে। পরবর্তী সময়ে এই এলাকা চলে যায় রাজা দেবেন্দ্রলাল খানের দখলে। অল্প পরিচিত জায়গাগুলির মধ্যে রাজ্যের পর্যটনকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে অন্যতম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোপগড়।
আরও সুনির্দিষ্ট ভাবে বলতে গেলে, গোপগড় হেরিটেজ অ্যান্ড নেচার ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার, যেখানে একটি বাংলোয় জঙ্গলের মধ্যে রাত্রিযাপন করা যায়। এলাকাটি মেদিনীপুর বনবিভাগের অধীনে পড়ে এবং ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের (পার্ক এলাকা) সীমানা ঘেরা কয়েকটি গ্রামের বাড়ি ছাড়া, মাইলের পর মাইল আশেপাশে কোনও জনবসতি নেই। ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অভ্যন্তরে একটি ওয়াচ-টাওয়ার ছাড়া চারপাশে সবুজের একটি মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। নির্জন পরিবেশে মনোরম প্রাকৃতিক জঙ্গল দর্শনের সুন্দর স্থান গোপগড়। অদূরেই কংসাবতী নদী তার দু’পাশে ধান ও সবজির ক্ষেত-সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্যের মধ্য দিয়ে বয়ে চলেছে। কংসাবতী নদীর উপর রেলওয়ে সেতুটি ওয়াচ টাওয়ার থেকে দৃশ্যমান ।
advertisement
advertisement
হাওড়া স্টেশন থেকে মেদিনীপুর লোকালে চেপে মেদিনীপুর জংশনে পৌঁছে যান। স্টেশন থেকে একটি রিকশা, অটো বা টোটো বুক করে রওনা দিন গোপগড় ইকো পার্ক (স্থানীয়রা এই জায়গাটিকে বলে)৷ আধঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যাবেন ইকো ট্যুরিজম পার্কে। পার্কের মধ্যে ঘুরতে এবং পিকনিক স্পটগুলি অনলাইনের পাশাপাশি টিকিট কাউন্টার থেকেও বুক করা যেতে পারে। গোপগড় হেরিটেজ অ্যান্ড নেচার ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের প্রধান আকর্ষণ হল গোপগড় হেরিটেজ বিল্ডিং, যা আসলে বিরাট রাজার প্রাসাদ ছিল। যদিও এখন সেই প্রাসাদের সামান্য ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। ধ্বংসের স্থানটি ইকো পার্কের ভিতরে।
advertisement
বিশ্বাস করা হয় যে মহাভারতে উল্লিখিত গোপগড় বিরাট রাজ্যের অংশ ছিল। তাই স্থানটির পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য দর্শনার্থীদের অনুরোধ করা হয়। গোপগড়ে রয়েছে রাত্রিযাপনের জন্য কয়েকটি কটেজ। রাত্রিযাপনের জন্য দুটি বাংলো আছে ‘পথিক’ ও ‘প্রিয়া’। একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং অন্যটি নন-এসি। দুটি বাংলোতেই ডাবল বেড, বেড রুম স্যাটেলাইট টেলিভিশন-সহ পরিষেবা আছে। রয়েছে প্রশস্ত ডাইনিং। পুরো এলাকাটি রহস্যময় । একটু দূরেই রয়েছে গোপনন্দিনী মন্দির। গ্রামের কয়েকজন প্রবীণকে জিজ্ঞাসা করে জানা যায় গোপ রাজার (গোপেগড়ের তৎকালীন রাজা) রাজত্বকালে একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল। একজন পাথর ব্যবসায়ী রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছিলেন যখন গাড়ি থেকে একটি পাথর পড়ে যায়। পাথরটি আর তুলতে পারেনি কেউ। অতঃপর তিনি স্থান ত্যাগ করেন। কিছু দিন পর, একজন স্থানীয় ব্রাহ্মণ নাকি দৈবাদিষ্ট স্বপ্নে দেখতে পান যেখানে মা দেবী নিজেই তাকে একটি মন্দির তৈরি করতে এবং পাথরটিকে গোপনন্দিনী (মা দেবীর রূপ) হিসাবে পূজো করার নির্দেশ দেন।
advertisement
আরও পড়ুন : পিছিয়ে পড়া খুদেদের পড়াশুনা শেখাতে মালদহতে খোলা আকাশের নীচে ক্লাস দাদাদের
পরবর্তীতে গোপ রাজার পৃষ্ঠপোষকতায়, এই মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল এবং এটি স্থানীয়দের কাছে একটি পবিত্র উপাসনালয় হিসাবে আজ অবধি রয়েছে। কারণ আজও মন্দিরের সামনে যে কোনও গাড়ির গতি কমে যায় এবং চালক, কন্ডাক্টর এবং যাত্রীরা করজোরে দেবী গোপনন্দিনীর কাছ থেকে আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।
বাংলা খবর/ খবর/পশ্চিম মেদিনীপুর/
Weekend Tour: ঘরের কাছেই আরশিনগর! ছোট্ট বিরতিতে বেড়াতে আসুন মেদিনীপুরে ‘পাণ্ডবদের অজ্ঞাতবাস’-এ
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement