কোনরকম কোচিং ক্লাস ছাড়াই সর্বভারতীয় ডাক্তারির প্রবেশিকা (Medical Exams )পরীক্ষায় (এনইইটি) বসে ১৯৪৭ রেঙ্ক করেছে এই বিস্ময় কিশোর। তার এই কৃতিত্বে এলাকার বাসিন্দারা তো বটেই, ভাঙড়ের প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারাও তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। এখন ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর জাহিরুদ্দিন চাইছে কলকাতা মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করতে।
যদিও আর্থিক প্রতিকূলতা বর্তমানে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে ভাঙড়ের এই তরুণ তুর্কী জাহিরুদ্দিন। প্রতিবেশীদের কথায়, ছোট থেকেই শান্ত স্বভাবের ছিল সে। নিজের সাফল্যের বিষয়ে বলতে গিয়ে নিতান্তই লাজুক দেখলো ভাঙড়ের সাফল্যের শিখর ছোঁয়া এই ছাত্রকে।
advertisement
জহিরুদ্দিনের (zaharuddin biswas) বাবা, নজরুল বিশ্বাসের পাড়ার একটি মুদিমালের দোকান রয়েছে। মা তহমিনা বিশ্বাস নিতান্তই গৃহবধূ। দিন আনা দিন খাওয়া এই পরিবারের দুই সন্তান। দু'জনেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবি। জাহিরুদ্দিনের দিদি বর্তমানে এম এ পড়ছে। জাহিরুদ্দিনের বাড়ি ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড সংলগ্ন শ্যামনগর গ্রামে।
ওই এলাকায় সারবছরই কিছু না কিছু অশান্তির পরিবেশ লেগে থাকায়, জাহিরুদ্দিনের বাবা তাঁকে মুর্শিদাবাদের বসন্তপুরে একটি বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। সেখান থেকে মাধ্যমিক পাশ করার পর, হাওড়া উদয়নারাপুরের আল আমিন মিশনে ভর্তি হন জাহিরুদ্দিন। এরপর, কলেজ শেষ করে প্রায় এক বছর বাড়িতে বসেই বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয় জাহিরুদ্দিন।
টাকা পয়সার অভাব থাকার কারণে, বিশেষ কোন টিউশন নিতে পারেনি মেধাবী এই ছাত্র। নিজেই তখন ইউটিউব (You Tube) দেখে মেডিকেল সংক্রান্ত বিভিন্ন ফ্রি কোচিং ক্লাস নেওয়া শুরু করে জাহিরুদ্দিন। সেখান থেকেই আজকের এই সাফল্য এসেছে তার। ছেলের সাফল্যে খুশি বাবা-মা ও।
জাহিরুদ্দিনের এই সাফল্য প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ভাঙড় (Vangar) দু নম্বর ব্লকের বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন,'ও যেটা করেছে সেটা দুঃসাধ্য কাজ। এজন্য আমি ওঁকে কুর্নিশ জানাই।' তথ্যপ্রযুক্তির যুগে জাহিরুদ্দিন এর এই সাফল্য দৃষ্টান্ত তৈরি করবে ভাঙ্গড় সহ জেলার বিভিন্ন ছাত্রছাত্রীদের কাছে। জাহিরুদ্দিনের এই আর্থিক প্রতিকূলতাকে জয় করে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এখন এলাকার বিভিন্ন সংগঠন তার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।
রুদ্র নারায়ন রায়