বনদপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিক থেকে নিচুস্তরের বনকর্মীদের দেওয়া হচ্ছে বিশেষ প্রশিক্ষণ। আগামীদিনে এইসব বনকর্মীরাই ম্যানগ্রোভের জঙ্গলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, বাঘশুমারির কাজে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। মূলত বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবন বলেই খ্যাত সুন্দরবন। তাই এই ম্যানগ্রোভ বাদাবনের দেশে বাঘের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ বনদপ্তরের কাছে। ভৌগলিক দিক থেকে বিচ্ছিন্ন এই সুন্দরবন এলাকায়, জলে জঙ্গলে নানাবিধ সমস্যার মধ্যেও বনকর্মীরা বাঘের সংখ্যা নির্ধারণের জন্য বিশেষ প্রযুক্তির ক্যামেরা লাগিয়ে আসবেন জঙ্গলের বিশেষ বিশেষ প্রান্তে।
advertisement
অতীতে বাঘের পায়ের ছাপ ও মল সংগ্রহ করেই বাঘের সংখ্যা নির্ধারন করা হতো। কিন্তু, পরবর্তী সময়ে সেই পদ্ধতি বাতিল করে উন্নত প্রযুক্তির ক্যামেরা বসানো হয়ে থাকে। বন দফতর সূত্রে খবর, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের জন্য বনকর্মীদের ১০ টি দল তৈরি করা হচ্ছে। এক একটি দলে ১২ থেকে ১৫ জন বনকর্মী থাকবেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই ক্যামেরা বসানোর কাজ চলবে গোটা সুন্দরবন এলাকায়। এক একটি জায়গা চিহ্নিত করে সেখানে দু'টি করে ক্যামেরা বসানো হবে। নির্দিষ্ট সময় পরে সেই সব স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরাগুলি খুলে নিয়ে ছবি বিশ্লেষণ করে বাঘের সংখ্যা নির্ধারণ করবেন বিশেষজ্ঞেরা। বিশেষ পরামর্শ দিতে ওড়িশা ম্যানগ্রোভ ডিভিশনের পাঁচ জন বিশেষজ্ঞও এসেছেন প্রশিক্ষণ শিবিরে। প্রায় ১৫ হাজারের মত ক্যামেরা বসানো হবে জঙ্গলে, বলে জানা যায় বনদপ্তর সূত্রে। পূর্বের বাঘশুমারি তে সুন্দরবনে ৯৬ টি বাঘের অস্তিত্ব মিলেছিল। তবে যেভাবে বেশ কিছুদিন ধরে বাঘের হামলার ঘটনা ঘটছে, তাতে জঙ্গলে বাঘের সংখ্যা আগের থেকে বেশ অনেকটা বেড়েছে বলে অনুমান বনকর্মীদের।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন , 'বাঘ গণনার জন্য জঙ্গলে কিভাবে যেতে হবে, কি পদ্ধতিতে ক্যামেরা বসানো হবে সেটাই শেখানো হচ্ছে বনকর্মীদের। এবছর থেকে নতুন একটি অ্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে বাঘগণনার কাজে।' বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, বাঘের সংখ্যা নির্ধারিত হলে পরবর্তী সময়ে বাঘের আক্রমণ কেন বাড়ছে সেই কারণও চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। চলতি বছরে প্রায় ৪০ জনের উপর মৎসজীবি বাঘের আক্রমণের শিকার হন।






