ক্যানিং শহর পৌরসভার তকমা হারিয়ে বর্তমানে পঞ্চায়েতের অধীনস্ত। মাতলা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্যানিং শহরের যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার পাহাড় জমছে। আর সেই ময়লা আবর্জনা থেকেই দূষণ ছড়াচ্ছে সমগ্র ক্যানিং শহরে। যার জেরে অতিষ্ট মাতলা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সমস্ত নাগরিক সহ নিত্য যাতায়াত কারী লক্ষ লক্ষ যাত্রী সাধারণ এবং সুন্দরবনে ঘুরতে আসা ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা। এলাকার যেখানে সেখানে প্লাষ্টিক, ময়লা আবর্জনা ফেলছেন সাধারণ মানুষজন।এমনকি রেহাই মিলছে না খোদ মহকুমা শাসকের দফতর সংলগ্ন রাস্তা, ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, ক্যানিং সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সহ মাছ ও সবজি বাজার, এমনকি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে অবস্থিত কোভিড হাসপাতাল লাগোয়া যাতায়াতাতের রাস্তা অব্দি। ফলে সুন্দরবনের প্রাণকেন্দ্র ক্যানিং শহর যে দূষণে ভরপুর, তা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।
advertisement
উল্লেখ্য এই মাতলা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নির্দিষ্টভাবে ময়লা ফেলার কোন জায়গা নেই। এলাকাবাসীদের দূষণের হাত থেকে এবং প্লাষ্টিক ময়লা আবর্জনা থেকে মুক্তি দিতে মাতলা পঞ্চায়েত পৌরসভার ধাঁচে ময়লা পরিষ্কারের জন্য পাঁচটি গাড়ি বরাদ্দ করেছে। প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে ১১ টা পর্যন্ত শহরের অলিগলিতে ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করে। তবে নির্দিষ্ট ভাবে ময়লা ফেলার জায়গা না থাকায়, সেই সমস্ত ময়লা আবর্জনা মাতলা নদীর চড়ে ফেলা হয়। সেখানেও আবর্জনার স্তুপের পাহাড় জমেছে।
ক্যানিং মাছ-সবজি বাজার, কোভিড হাসপাতাল, ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সামনে যাতায়াতের ঝাঁ চকচকে কংক্রিটের তৈরী রাস্তার দুপাশে এবং রাস্তাও ঢেকেছে জঞ্জাল ও প্লাস্টিকের আবর্জনায়। ঢালাই রাস্তার উপর এতোটাই ময়লা আবর্জনা জমা হয়েছে যে রাস্তা রয়েছে কি না তা বোঝারও উপায় নেই। আর সেই ময়লা আবর্জনার উপর কুকুর, শূকর, গরু সহ বিভিন্ন কাক পক্ষীদের অবাধ বিচরণ। অবাধ বিচরণের জন্য সেই সমস্ত ময়লা আবর্জনা প্রকাশ্যে জনবহুল রাস্তার উপর ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে দূষণের মাত্রা আরো কয়েকগুণ বেড়ে চলেছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় চরম অবক্ষয়ের পথে ঐতিহ্যবাহী ক্যানিং শহর।
তবে এ বিষয়ে আশার বাণী শুনিয়েছেন মাতলা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হরেন ঘোড়ুই। ইতিমধ্যে ক্যানিং শহরকে স্বচ্ছ নির্মল শহর গড়তে তৎপর হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। তিনি জানিয়েছেন ‘‘এ বিষয়ে মাতলা নদীর চরের বেশকিছু জায়গা চিহ্নিত করে স্থায়ী ভাবে ভ্যাট তৈরীর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে সলিড ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতিতে এই বর্জ্য নিষ্কাশন করা যায়। ইতি মধ্যে সেই প্রোপোজাল ক্যানিং এক বিডিও ও মহকুমা শাসককে জানানো হয়েছে।’অন্যদিকে ক্যানিং এক বিডিও শুভঙ্কর দাস জানিয়েছেন, ‘মাতলা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নিকাশী ব্যবস্থার সমস্যা থাকায় ময়লা জমছে ঠিকই, তবে পঞ্চায়েত সেগুলো তৎক্ষণাত পরিষ্কার করে ফেলছে। তা ছাড়াও পঞ্চায়েতের তরফে একটি প্ল্যান জমা দেওয়া হয়েছে এ ব্যাপারে। কি ভাবে ওই সমস্ত ময়লা আবর্জনা সঠিক পদ্ধতিতে নিষ্কাশন করা যায় এবং নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা যায় সেটা খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে করে ঐতিহ্যবাহী ক্যানিং, নির্মল শহর হিসাবে গড়ে ওঠে’। ময়লা আবর্জনার পাশাপাশি দুর্গন্ধ থেকে কবে মুক্তি মিলবে ক্যানিং শহরের? এখন এমন প্রশ্নই তুলছেন এলাকার বাসিন্দাদের।






