এলাকায় পাঠশালার প্রয়োজন , গ্রামের মুরব্বিরা তা নিয়ে প্রাশাসনের কাছে আর্জি জানালে অবশেষে ২০১৩ সালে সরকার থেকে একটি বড় হল ঘরের ন্যায় একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হয় । নাম দেওয়া হয় চটহাট বারোঘোরিয়া জুনিয়র হাইস্কুল । তখন থেকেই একজন শিক্ষককে সেখানে নিযুক্ত করা হয় । পঞ্চানন সিংহ । প্রাইমারি স্কুলের এই শিক্ষককে নিয়োগ করা সহ শিক্ষক হিসেবে । আশা করা হয়েছিল অন্যান্য আর পাঁচটা স্কুলের মত এই জুনিয়র হাইস্কুলেও শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিযুক্ত করা হবে। কিন্তু তা আর হয়নি ।
advertisement
বছর যত গড়িয়েছে বেড়েছে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা । এই মুহুর্তে ছোট এই স্কুলেও চারটি ক্লাস মিলিয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১০০।ভরসার আরেক নাম পঞ্চানন মাস্টার হলেও তার পরিস্থিতি নিধিরাম সর্দারের মত । স্কুলে যে আর দ্বিতীয় কোন শিক্ষক নেই । পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত তাকেই পড়াতে হয় । আরও বড় সমস্যা নেই পর্যাপ্ত ক্লাসরুম । সেই যে ২০১৩ সালে সরকার থেকে একটি বড় হল ঘরের মত করে দেওয়া হয়েছিল সেটাকেই তিনি চারটি ভাগে ভাগ করেন । একটি অফিস রুম , একটি কম্পিউটার রুম আর চারটি শ্রেণীর জন্য মাত্র দুটি ক্লাস । পঞ্চম থেকে ষষ্ট শ্রেণী পর্যন্ত একটি ক্লাস আবার সপ্তম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত আরেকটি ক্লাস । একটি ঘরে দুটো করে শ্রেণির পড়াশুনো চলছে দিনের পর দিন থেকে । ভাগাভগি করে বসে ছাত্রছাত্রী।
আরও পড়ুন: পণ্ডিতিয়ায় নতুন ফ্ল্যাটে অর্পিতা যোগ ! আরও কোটি কোটি টাকা? দরজা না খুলে, সিল করল ইডি! জানুন কারণ
নিজে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক হলেও পঞ্চম থেকে অষ্টম সব ক্লাসের সব বিষয়ই পড়াতে হয় । পঞ্চানন সিংহ জানান, চারটি ক্লাসের সমস্ত বিষয়ের কাজ চলছে অফিসিয়াল অনেক কাজ , সেটাও করতে হয় , সরকারের কাছে আবেদন স্কুলের একটু গুরুত্ব দিয়ে টিচার , ক্লার্ক নিয়োগ করা হোক। এত প্রতিকূলতা থাকলেও সব কিছুর খেয়াল রাখেন পঞ্চানন বাবু। গ্রামের গরীব ছেলেমেয়েদের সামর্থ নেই অঢেল টাকা খরচ করে নামীদামিস্কুলে পড়ার , কিন্তু শিক্ষা যে সবার অধিকার । খোঁজ নেবারও যে কেউ নেই । তিনি চাইলে দিনের পর দিন স্কুল কামাই করতে পারেন । কিন্তু সে পথে না এগিয়ে গ্রামের ছেলে মেয়েদের শিক্ষার ভার তুলে নিয়েছেন নিজের কাঁধে।
অনির্বাণ রায়