রাজ্য সরকারের বারবার ঘোষণার পরও বেশ কিছু নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সরকারের নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজেদের মর্জি মতো চালাচ্ছে চিকিৎসা পরিষেবা। যেখানে রোগীর চিকিৎসাতে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নেওয়া বাধ্যতামুলক করেছে রাজ্য সরকার। সেখানে রোগীর পরিবার থেকে টাকা আদায় করতে নিত্যনতুন কৌশল এঁটে চলেছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। শিলিগুড়ি সংলগ্ন দেবীডাঙ্গার মধ্য পলাশের বাসিন্দা পরেশ বর্মন। পেশায় একজন নির্মাণ মিস্ত্রি। কাজ কাজ করতে গিয়েছিলেন একটি বহুতল। কাজ করতে গিয়েই সেখান থেকে পা পিছলে পড়ে মাথায় আঘাত পান তিনি। তারপর তাকে ২১ নভেম্বর শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে মেডিকেলে রেফার করা হয়। সেখানেও চিকিৎসার কোন সুরাহা না মেলায় তাকে শিলিগুড়ির প্রধাননগরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।
advertisement
দুঃস্থ পরেশ বর্মনের পরিবারের কাছে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেখিয়ে তাকে নার্সিংহোমে কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার জন্য নিয়ে নেয়। কিন্তু কার্ড থাকার পরেও বিভিন্ন পরীক্ষা ও পরিষেবার নামে ওই দুঃস্থ পরিবারের থেকে দফায় দফায় প্রায় ৬৭ হাজার টাকা আদায় করে নেয় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ বলে অভিযোগ। এদিকে চিকিৎসাতে কোনরকম সাড়া না দেওয়ায় পরিবার রোগীকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেয়৷ আর এখানেই শুরু হয় বিবাদ। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে ছেলের চিকিৎসার টাকা মিটিয়ে দেওয়ার আবেদন জানালেও তা মানতে নারাজ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। উলটে পরিবার চিকিৎসার বিল কত হয়েছে তা জানতে চাইলেও বিল না দিয়ে পালটা আগে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ।
এরপরই ২৯ অক্টোবর প্রধাননগর থানায় অভিযোগ দায়ের করে রোগীর পরিবার। পুলিশ গেলেও কোন পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার, শিলিগুড়ির মেয়রকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানায় রোগীর পরিবার। রোগীর মা মিনতি বর্মন বলেন, "স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিলেও বারবার টাকার দাবি করা হয়। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে যাতে চিকিৎসা না করে টাকা দিয়ে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। এখন বিল না দিয়েই টাকা দাবি করছে। ছেলেকে আটকে রেখেছে, কোন চিকিৎসা করছে না।" ওই বিষয়ে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেন, "অভিযোগ মিলেছে। সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"
অনির্বাণ রায়