পুরুলিয়া: ১০০-র গণ্ডি পেরিয়েছেন আগেই। ১১ সন্তানের জননী তিনি। পরাধীন ভারতে ইংরেজের ভয়ঙ্কর অত্যাচারের সাক্ষী তিনি। নিজের চোখে দেখেছেন দেশ স্বাধীন হতে। পুরুলিয়ার পাড়া বিধানসভার রঘুনাথপুর-২ ব্লকের মঙ্গলদা মৌতড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ধানারা গ্রামের বাসিন্দা হরিমতি বন্দ্যোপাধ্যায়। একান্নবর্তী পরিবার নিয়ে তাঁর বসবাস। ১০০-র গন্ডি পাড় করলেও চোখে নেই চশমা। দিব্যি সতেজ আছে স্মৃতিশক্তি। আজও গড় গড় করে বলে দিতে পারেন ইংরেজরা কেমন করে ভারতীয়দের উপর অত্যাচার করত। সব দেখেছেন, বুঝেছেন কিন্তু কখনই প্রচারের আলোয় আসেনি। সম্প্রতি সেই তাঁকেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। হাতে তুলে দেওয়া হয় মানপত্র। রঘুনাথপুর-২ ব্লকের যুগ্ম বিডিও শুভদীপ বৈদ্য তাঁর হাতে মানপত্র তুলে দেন।
এই বিষয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামী হরিমতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইংরেজদের হাত থেকে বাঁচতে প্রায়সই জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের লড়াইয়ে শরিক হয়েছিলেন। ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। নিজের চোখে দেখেছিলেন স্বাধীনতার প্রথম সূর্যোদয়। নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি পেয়ে তিনি খুব খুশি পুরুলিয়ার এই শতবর্ষ পার করা বৃদ্ধা। জানালেন, এই মানপত্রকে আমৃত্যু বুকে জড়িয়ে রাখতে চান তিনি। সেই সঙ্গে তার বড় শখ, মৃত্যুর আগে একটিবার অন্তত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বচক্ষে সামনে দাঁড়িয়ে দেখা।
গোটা মানভূমের মানুষদের গর্ব হরিমতি বন্দ্যোপাধ্যায়। দেরিতে হলেও এই বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীকে তার যথাযত মর্যাদা দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। অবশেষে এই লড়াকু নারী যে নিজের যোগ্য সম্মান পেলেন তাতে আপ্লুত তাঁর পরিবারের সদস্যরা।