পুরাণের কথা অনুযায়ী হিমালয় কন্যা পার্বতী সঙ্গে দেবাদিদেব মহাদেবের বিয়ে চূড়ান্ত। বিয়েতে সাদা মুকুট পরার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন মহাদেব। দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার ওপর সেই মুকুট তৈরির ভার পড়ল। মহাদেবের ইচ্ছায় তৈরি হল এক ধরনের নরম উদ্ভিদ। পৃথিবীতে জন্মাল শোলা গাছ। কিন্তু বিপত্তি দেখা দিল অন্য জায়গায়। শোলার মত নরম হালকা সামগ্রী দিয়ে কাজ করতে অভ্যস্ত নন স্বয়ং বিশ্বকর্মা। সেই সমস্যার কথা তিনি জানালেন দেবাদিদেবকে। তখন মহাদেবের ইচ্ছায় জলাশয়ে এক সুকুমার যুবকের আবির্ভাব ঘটল।
advertisement
আরও পড়ুনঃ চাষীদের সুবিধার্থে ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে কীটনাশক স্প্রে
মালাকার হিসেবে পরিচিতি পেলেন সেই যুবক। তৈরি হল মহাদেবের শোলার মুকুট। তার থেকেই বিস্তার হয় মালাকার সম্প্রদায়। দেব-দেবীদের ডাকের সাজ তৈরি করেন মালাকারেরা এই ডাকের সাজ কথাটার পেছেনেও একটা গল্প আছে। পলাশির যুদ্ধের পর থেকে কলকাতায় বনেদী বাড়ি গুলিতে বাড়তে থাকে দুর্গাপূজার কালচার। পুজো ঘিরে আত্মিক যোগ ছিল ইউরোপের সঙ্গে। প্রতিমার সাজ আসত জার্মানি থেকে। ডাক মারফত সেই সাজ আসত বলে বলা হত ডাকের সাজ। আজও মালাকার পরিবার দেবদেবীর এই গহনা তৈরি করে আসছেন নিষ্ঠার সঙ্গে।
দু'বছর মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে এবার আবার ছন্দে দুর্গাপুজো। তারপর এবার পুজো এবার বিশ্বজনীন। নিঃশ্বাস ফেলার সময় নেই মালাকারদের। লাভ লোকসান গায়ে লাগে না। মাকে সাজানোটাই এক মাত্র নেশা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ২ নং ব্লকের ঝুরিয়া গ্রামের জয়দেব গিরি একজন শোলা শিল্পী। সারাবছর এই ডাকের শিল্পর সঙ্গে যুক্ত থাকেন। ভালোবাসা থেকেই করেন।কিন্তু লাভের ঘরটা শূন্যই থাকে। রকেট গতিতে বাড়ছে আঠা, চুমকি, শোলার দাম।
আরও পড়ুনঃ সাজ সাজ রব, জেলা সফরে আসছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কিভাবে এই ব্যবসা ধরে রাখবেন বুঝে উঠতে পারছেন না কিছুতেই। দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির বাজারে ভাল নেই শিল্পিরা। জিনিসপত্রের দাম যেভাবে হুহু করে বাড়ছে সেভাবে লাভ হচ্ছে না। অনেকটাই মলিন হয়ে গিয়েছে তাদের মুখের হাসি। মায়ের অলঙ্কার তৈরির গর্বটাই আলাদা। টাকা পয়সা এখানে নিমিত্ত মাত্র। তাই লাভ লোকসানের কথা মাথায় না রেখে দেব দেবীর গহনা তৈরি খুব ব্যস্ত শিল্পীরা।
Saikat Shee