তৈল শোধন কারখানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, হলদিয়া পৌরসভার অন্তর্গত বাসুদেবপুরে রয়েছে মহকুমা হাসপাতাল। হাসপাতালে নেই কোন বার্ণ ইউনিট। ফলে কারখানায় কাজ চলাকালীন অগ্নিসংযোগ গড়লে দুর্ঘটনাগ্রস্ত শ্রমিকদের তমলুকে অবস্থিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতাল না হলে কলকাতা স্থানান্তরিত। অনেক সময় রোগীকে স্থানান্তরিত করার সময় প্রাণ সংশয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। শিল্প শহরেই বার্ণ ইউনিট থাকলে অগ্নি সংযোগের ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা পাবে।
advertisement
তবে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালেই বহুবার বার্ণ ইউনিট গড়ে তোলার আলোচনা হয়েছে কিন্তু কাজ হয়নি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়। দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে শুরু হতে চলেছে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে বার্ণ ইউনিট গড়ে তোলার কাজ। রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে এই বার্ণ ইউনিট গড়ছে আইওসি। পৌরসভার বাসুদেবপুরে অবস্থিত হলদিয়া। এবার শীঘ্রই ঐ বিভাগের পরিষেবা পাবেন শিল্প শহরবাসী। হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে নির্মিত হবে দ্বিতল বিশিষ্ট বার্ণ ইউনিট। সেখানে নিচের তলায় থাকবে বার্ণ এবং ওপর আইসােলেশন ওয়ার্ড।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় নতুন দ্বিতলভবন তৈরি করা হবে। ভবনের নীচের তলায় থাকবে ২০ টি শয্যার বার্ণ ওয়ার্ড দোতলায় থাকবে ২০ টি শয্যার আইসােলেশন ওয়ার্ড। এই বার্ণ ইউনিট গড়ে তুলতে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের হলদিয়া রিফাইনারি ইউনিট। সব মিলিয়ে মোটা খরচ হবে ১০ কোটি টাকা। এতদিন শিল্প শহরে কোনও বার্ণ ইউনিট না থাকায় কারখানাগুলিতে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে আহতদের নিয়ে ছুটতে হত কলকাতায়।
আরও পড়ুনঃ গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরের আয়োজন
বার্ণ ইউনিট তৈরি হলে সেই যন্ত্রণার অবসান হবে বলে আশাবাদী স্বাস্থ্য দফতর এবং আইওসি কর্তৃপক্ষ। বার্ণ ইউনিট গড়ে তোলার জন্য হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে যৌথ পরিদর্শন করেন ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষ ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, 'অনেক আগে থেকেই এই প্রকল্পগুলি হওয়ার কথা ছিল। তার জন্য আমরা জায়গা পরিদর্শন করেছি। শিগগিরই সে কাজ শুরু হবে। তাহলে আরও ভাল পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে।' ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের দাবি, হলদিয়াতে রয়েছে বড় বড় শিল্প কারখানা। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি রাসায়নিক কারখানা। সেইজন্য হলদিয়াতে বার্ণ ওয়ার্ডের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি।
আরও পড়ুনঃ একাধিক দাবি নিয়ে বিক্ষোভে জেলার পান চাষীরা
হঠাৎ করে কিছু হয়ে গেলে চিকিৎসা করানোর জন্য প্রায় ১২০ কিমি দূরে কলকাতাতে নিয়ে যেতে হয়। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা যাতে এখানেই পাওয়া যায় সেই জন্য বার্ণ ওয়ার্ড-এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেই আর্থিক সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সার্বিকভাবে হলদিয়া মহকুমা এলাকার মানুষ যাতে আধুনিক মানের চিকিৎসা পরিষেবা পেতে পারেন সেই বিষয়টিও নজরে রয়েছে আইওসি কর্তৃপক্ষের। হলদিয়া শিল্পাঞ্চল শহরের কলকারখানা শ্রমিক থেকে সাধারণ মানুষ চাইছে আর টাল বাহানা না, দ্রুতই গড়ে উঠুক এই বার্ণ ইউনিট। হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে বার্ণ ইউনিট গড়ে উঠলে উপকৃত হবে হলদিয়া শহরবাসী।
Saikat Shee