দোকানের বিক্রি হওয়া অর্থ ক্যাশ বাক্সে রেখে রাতে চলে যায় দোকানের মালিক। সকালে এসে দেখে ক্যাশ বাক্সে টাকা নেই। এত হাজার টাকা গেল কোথায়! কিন্তু ক্যাশ বক্সের বা দোকানের মেন গেটের তালা ভাঙা নেই। এই অভিনব চুরি থেকে অবাক হয় মালিক। দোকানের অন্যান্যদের জানায় তারা নিয়েছে কি না। কিন্তু অন্যান্য কর্মচারীরা জানায় কেউই টাকায় হাত দেয়নি তবে এতোগুলা টাকা গেল কোথায়। চিন্তায় পড়ে দোকানের মালিক। পরে দোকানের গর্ত থেকে উদ্ধার হল খোয়া হয়ে যাওয়ার ১২ হাজার ৭০০ টাকা। সসিটিভি ক্যামেরাকে সাক্ষী রেখে চোরাই মাল চেনা জায়গায় রাখতে যেত চোর। চোর কে দেখে অবাক হওয়ার দোকানের মালিকসহ অন্যান্যরা।
advertisement
তমলুকের হাসপাতাল মোড়ে জেলা পরিষদের মার্কেট কমপ্লেক্সেই অমলকুমার মাইতির মশলাপাতির দোকান। রাতে দোকানের ক্যাশবাক্সে নগদ ১৩ হাজার টাকা রেখে বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। এদিন সকালে দোকান খুলে চোখ কপালে। ক্যাশবাক্স ফাঁকা। কোনও টাকা নেই। খবর পাওয়ার পর আশপাশের দোকানদাররা ভিড় জমান। কিন্তু তাদের কোনও পরামর্শই মনপসন্দ হচ্ছিল না অমলবাবুর। আশেপাশের স্থানীয় বাসিন্দা ও অন্যান্য দোকানদাররা পুলিশে অভিযোগ জানানোর কথা বলে। কিন্তু অমল বাবুর মনকে সায় দিচ্ছিল না।
আরও পড়ুন: বাসি রুটি খান? শরীরের ক্ষতি করছে এই রুটি? নাকি হচ্ছে দারুণ উপকার? জানুন
অমলবাবুর দোকানে চার-চারটি সিসিটিভি ক্যামেরা। পুলিশের ফোন করার আগে একবার তার ফুটেজ দেখবেন বলে ঠিক করলেন অমলবাবু। চালানো হল ফুটেজ। অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়ল না। দোকানের এক কর্মচারী রাতে সেখানে থাকেন। তাঁকেও ফুটেজে দেখা যাচ্ছিল না। তাছাড়া কাউকে অকারণে দোষারোপ করতেও নারাজ অমলবাবু। ফলে ফের মনমরা হয়ে গেলেন। থম মেরে বসেই রইলেন দোকানে। এভাবে কিছুক্ষণ কাটার পর কয়েকজনের পরামর্শে আবারও ফুটেজ দেখার পরিকল্পনা হল। এবার আরও খুঁটিয়ে দেখা হল সারারাতের ফুটেজ। দেখতে দেখতে হাই উঠতে শুরু করল সবার। কিন্তু চোরের দেখা নেই। এই করতে করতে সিসিটিভির ঘড়িতে রাত শেষ হয়ে সকাল সাতটা। হঠাৎ একজন চিৎকার করে উঠলেন- 'এক মিনিট। এক মিনিট। তাঁর কথা শুনে ফুটেজের রিওয়াইন্ড হল। আর শনাক্ত হল অপরাধীও। দেখা গেল চোর বাবাজিটি আর কেউ নয়, বেশ হৃষ্টপুষ্ট সাইজের একটি ইঁদুর।
আরও পড়ুন:
ক্যাশবাক্সে সামান্য একটু ফাঁক। সেটি আবিষ্কার করেছে সে। তারপর তাতে মুখ গলিয়ে নোট বের করছে। কখনও একটা, কখনও এক গোছা। তারপর তা মুখে করে তড়বড় করে চারপেয়ে হেঁটে যাচ্ছে দোকানের এক কোণে। সেখানে গচ্ছিত রাখছে চোরাই টাকা। যাচ্ছে আর আসছে। এই করতে করতে ক্যাশবাক্স প্রায় ফাঁকা করে সেঁধিয়ে গেল গর্তে। এরপর খোঁজ খোঁজ। ইঁদুরের সেই গোপন ভল্টের সন্ধান অবশেষে মিলল। পাওয়া গেল ১২ হাজার ৭০০ টাকাও। সিদ্ধিদাতার বাহন বলেই বোধহয় ব্যবসায়ী অমলকুমার খুব একটা আমল দিলেন না বিষয়টিকে।
Saikat Shee