কাঁচা মালের সঙ্গে প্রসেসিং কাজুর মূল্যে সামঞ্জস্য থাকছে না বলে দাবি বেঙ্গল কাজু অ্যাসোসিয়েশনের। কাজু ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এর ফলে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি-১ ব্লকের কাজু শিল্পে দেখা দিয়েছে সঙ্কট। এখানকার বিভিন্ন গ্রামে কাজু প্রসেসিং ইউনিটের ছড়াছড়ি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ধর্মঘটের ডাক দেওয়ায় কাজ হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে শ্রমিকদের মধ্যে।
advertisement
আরও পড়ুন: বিধানসভায় বিধান রায়ের ৪০ মিনিটের ভাষণেই বদলে যায় দুর্গাপুরের ভাগ্য
কাঁথি-১ ব্লকের মাজনা এলাকা কাজু প্রসেসিংয়ের মূল কেন্দ্র। মাজনা, রানিয়া, দুলালপুর, শীতলপুর প্রভৃতি এলাকার মানুষের রুটিরুজি মূলত কাজু ব্যবসার উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে। এখানকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে চলে কাজু প্রসেসিংয়ের কাজ। যন্ত্র নির্ভর প্রসেসিং ইউনিট আছে বড় বড় কোম্পানির। কাজু শিল্পের কাঁচামাল মূলত আসে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে। আফ্রিকা থেকে কাঁচামাল আমদানির খরচ ও তার সঙ্গে প্রসেসিং খরচ যোগ করে বাজার জাত করা হয় প্রসেসিং কাজু।
বর্তমানে কাঁচা মালের দাম বস্তা পিছু ১০ হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। অথচ প্রসেসিং কাজুর দাম বিভিন্ন গ্রেডে নেমে গেছে কিলো প্রতি প্রায় ১০০ টাকার উপর। ফলে প্রসেসিং কাজু বিক্রি করে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাই এক মাসের জন্য কাজু প্রসেসিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাজু প্রসেসিং ব্যবসায়ীদের সংগঠন বেঙ্গল কাজু অ্যাসোসিয়েশন। অন্য সংগঠনগুলিও একই পথে হেঁটেছে। প্রসেসিং কাজু কেনা বেচা অবশ্য চালু থাকছে। এই প্রসঙ্গে এক কাজু ব্যবসায়ী বলেন, কাজু প্রসেসিং বন্ধ করা ছাড়া ব্যবসায়ীদের সামনে আর কোনও রাস্তা খোলা ছিল না। প্রতিদিন ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছিল।
কাজু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বহু জায়গায় কোম্পানির গাড়ি গিয়ে কাজু শ্রমিকদের কারখানায় নিয়ে আসে। কাজ শেষে তাদের আবার গাড়ি করে বাড়ি পাঠানো হয়। শ্রমিকদের বেতন, তাদের যাতায়াত, প্রসেসিং খরচ প্রভৃতি কাঁচা মালের সঙ্গে যোগ করলে প্রতিদিন ক্ষতির বহর বাড়ছে। একমাস প্রসেসিং বন্ধ থাকলে ক্ষতির হাত থেকে অন্তত বাঁচবেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ব্যবসায়ীদের এই সিদ্ধান্তে সংসারে হাঁড়ি চড়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে শ্রমিকদের। ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এলাকায় পুঞ্জিভূত হচ্ছে ক্ষোভ। ব্যালট বক্সে এর কী প্রভাব পড়ে সেটাই এখন দেখার। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের আশঙ্কা, এমন ঘটনার জেরে কাঁথি এলাকায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটের হার কমে যেতে পারে।
সৈকত শী





