উপকূলবর্তী জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে বহু মানুষ বংশ পরম্পরায় মাছ ধরেন। তবে কিছুদিন আগেও পরিস্থিতিটা ছিল অন্যরকম। মৎস্যজীবীদের ছেলেরা লেখাপড়া শিখলে আর পারিবারিক পেশায় আসছিল না। বরং অন্য চাকরি-বাকরি, ব্যবসা খুঁজে নিচ্ছিল। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি এবং দেশ-বিদেশের বিপুল বাজারের সম্ভাবনা আবার মৎস্য শিকারে উৎসাহ তৈরি করছে তরুণ প্রজন্মের মনে।
আরও পড়ুন: আয়োজিত হল ডিস্ট্রিক্ট ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপ, সফল প্রতিযোগীরা রাজ্যস্তরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন
advertisement
সদ্য স্নাতক পাস করা সুরজিত দাস, কেন্দেমারির সনজিৎ মণ্ডল, কাঁটাখালির বিজয় দাস, গাংরাচরের মলয় বর্মনরা নদীতে মাছ ধরাকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। তালপাটি খাল, ধুসা খাল, কাঁটাখালি খাল, আসিমেনিয়ার খাল, বাছুর মারি খাল, কেন্দেমারি খাল প্রভৃতি জায়গায় নৌকা নিয়ে ঘুরে মাছ ধরছেন তাঁরা। মৎস্য দফতরের সমীক্ষায় উঠে এসেছে কেন্দেমারি, কাঁটাখালি, সাউদখালি ও গাংরাচরের বহু শিক্ষিত যুবক পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন মাছ ধরাকে।
তরুন মৎস্যজীবী মলয় বর্মন বলেন, মহিষাদল রাজ কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেছি। তার পর মাছ ধরাকে পেশা হিসেবে নিয়েছি। এখানে উপার্জন ভালো, আনন্দেও আছি। বেকার যুবকরা মাছ ধরাকে পেশা হিসেবে নিতেই পারে। এটা স্বাধীন পেশা। এখানে উপার্জনের সঙ্গে আনন্দও আছে। তিনি আরও বলেন, নতুন নৌকা করতে গেলে ২ লক্ষ টাকা খরচ হয়। তবে পুরোনো নৌকা কিনে সারিয়ে নিলে ১ লাখ টাকায় হয়ে যাবে। বেকার একজন ছেলে মাছ ধরাকে পেশা হিসেবে নিলে নৌকা ছাড়া জাল দড়ি সহ অন্যান্য জিনিস কিনতে ৫০ হাজার টাকা লাগবে। তবে ইলিশ মাছ ধরার নৌকা করতে হল আরও একটু বেশি মূলধন লাগবে।
এই তরুণ মৎস্যজীবীরা সরকারি প্রশিক্ষণ নিয়ে নদীতে মাছ ধরার যাবতীয় নিয়মকানুন জেনে নিচ্ছেন। সেইসঙ্গে কী কী সরকারি নথিপত্র প্রয়োজন তা জেনেই তাঁরা একেবারে ময়দানে নামছেন। এই প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের মৎস্যচাষ সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন কুমার সাহু বলেন, নদী উপকূলবর্তী এলাকার তরুণ মৎস্যজীবিদের চিহ্নিতকরণ করে নৌকার রেজিস্ট্রেশান, লাইসেন্সিংয়ের বিষয় যেমন বোঝানো হচ্ছে তেমনই টেকসই মৎস্য আহরণের পাঠ পড়ানো হচ্ছে। তাঁর মতে, শিক্ষিত বেকার যুবকরা মাছ শিকারে এলে নদীর বাস্তুতন্ত্র রক্ষা দিকে তারা সচেষ্ট হবে।
সৈকত শী