স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলনে এই জমিদার বাড়ি ওতপ্রোতভাবে ব্রিটিশ বিরোধী কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে। তাই ব্রিটিশরা শায়েস্তা করার জন্য পুড়িয়ে দেয় এই চন্দনপুর জমিদার বাড়ি। ব্রিটিশদের অত্যাচারে এক বছর দুর্গাপুজো প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। সেবার কোনওরকম আড়ম্বর ছাড়াই গোপনে দেবী মায়ের আরাধনা করা হয়। ২৫০ বছরের পুজোয় প্রতিমা নির্দিষ্ট ৬ ফুটের উচ্চতা হয়। কারণ এক বছর দেবীর প্রতিমার উচ্চতা ছোট হয়। সেবার জমিদার বাড়ির এক পরিবার সদস্যের মৃত্যু হয়। তারপর থেকে নাকি দেবীর স্বপ্নাদেশে নির্দিষ্ট ৬ ফুটের মাপের মূর্তি গড়া হয় প্রতিবছর। নির্দিষ্ট একই কাঠের কাঠামোতে প্রতিবছর প্রতিমা গড়া হয়।
advertisement
আরও পড়ুন- অরিজিৎ সিং কত টাকা নেন ‘বিয়ে’-তে গান গাইতে? চমকে যাবেন টাকার অঙ্ক শুনলে
আরও পড়ুন-অকালে চলে গেলেন সলমনের কাছের মানুষ, পুজোর মরশুমে শোকের ছায়া বিনোদন জগতে
জৌলুস হারালেও বর্তমান প্রজন্ম সেই পুজো আগলে রেখেছেন। জমিদার বাড়ির পুজোর বিভিন্ন রীতি-নীতির ঐতিহ্য দেখার জন্য প্রতি বছর ভীড় জমান স্থানীয় লোক থেকে দিঘায় ঘুরতে আসা পর্যটকরাও। প্রতিমায় সাবেকি আনার ঐতিহ্য। জমিদার বাড়ি অনেক সদস্য দেশ-বিদেশে বিভিন্ন প্রান্তে থাকেন তারা পুজোর সময় ফিরে আসেন মায়ের আরাধনার জন্য। পুরনো জমিদার বাড়ি এখন নবরূপে সেজে উঠেছে। পুজোর দালান বাড়ি থেকে জগন্নাথ দেবের মন্দিরে লেগেছ নতুন রঙের প্রলেপ।
স্বাধীনতা সংগ্রামে রামনগরের চন্দনপুর জমিদার বাড়ি ইতিহাস গৌরবময়। ইংরেজদের পুড়িয়ে দেওয়া ক্ষত নিয়ে এখনও প্রাচীন গৌরব ও ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার বহন করছেন এই জমিদার বাড়ি। চন্দনপুর গ্রামের জমিদার বাড়ির গিন্নি সম্প্রতি পরলোকে পাড়ি দিয়েছেন। গ্রামের লোকেরা ভেবেছিল এবার হয়তো জমিদার বাড়ির পুজো বন্ধ থাকবে। কিন্তু পরিবারের লোকজন পুজো বন্ধ রাখতে রাজি নয়। ফলে এবারের দুর্গাপুজোর আয়োজন সারা। চলছে জোরকদমে ঠাকুরগড়ার শেষ প্রস্তুতি। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্থান পাওয়া এই জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো জেলার অন্যতম দুর্গাপুজো। কালের নিয়মে অতীতের উজ্জ্বলতা ফ্যাকাসে হলেও প্রাণের টান অনেক বেশি।
Saikat Shee