সূত্রের খবর এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সিপিএম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে ৮ জনকে। অন্তর্ঘাতের জন্য শোকজ করা হয়েছে ৬৯ জনকে। আর ২৫৪ জন পার্টি কর্মীকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিষ্ক্রিয় থাকার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: যাদবপুরের সঙ্গে ’মাওবাদী’ যোগ তুলে মামলা হাইকোর্টে, বিস্ফোরক দাবি শুভেন্দুর
পঞ্চায়েত নির্বাচনে পর জেলা কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শাসক দল। রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অনাদি সাহুরা ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই দল বিরোধী কাজের অভিযোগে পঞ্চায়েতের জয়ী সদস্য সহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। জানা গিয়েছে দলীয় লাইনের বাইরে হাঁটায় এরিয়া কমিটির সদস্যদেরও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রতাপদিঘি এরিয়া কমিটির সদস্য বাদল প্রামাণিক, চন্দ্রমোহন প্রামাণিক, এগরা এরিয়া কমিটির সদস্য সিতাংশু জানা, ভগবানপুর বেউদিয়া শাখা কমিটির সম্পাদক বলরাম দণ্ডদের পাশাপাশি হলদিয়া গ্রামীণ এরিয়া কমিটির চার সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
advertisement
জেলা সিপিএমের পক্ষ থেকে এরিয়া কমিটিগুলির কাছে জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যদের বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। সেখানে জানতে চাওয়া হয়েছে কে কে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে তৃণমূল বা বিজেপিকে সমর্থন করেছে। এরিয়া কমিটিগুলির তালিকা পাওয়ার পর পার্টির গঠনতন্ত্র অনুসার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সব মিলিয়ে স্থানীয় কিছু ইস্যু কিংবা নিজেদের স্বার্থে যে তৃণমূল ও বিজেপির সঙ্গে কোনও মতেই আপোষ করা যাবে না তা নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করল বামপন্থী দলটি।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের অবস্থান একেবারেই পরিষ্কার ছিল। বিজেপি-তৃণমূল উভয়ের বিরুদ্ধেই একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে। সারা রাজ্যে তাই হয়েছে। ৯৮ শতাংশ জায়গায় তাই হয়েছে। দু’য়েক জায়গায় তার ব্যতিক্রম হয়েছে। কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে স্থানীয় ইস্যুতে ভাবিত হয়ে তৃণমূলকে ঠেকাতে বিজেপিকে কিংবা বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূলকে বোর্ড গঠনে সমর্থন করেছেন। সেই সংখ্যাটা অত্যন্ত নগণ্য। দলের কোনও পঞ্চায়েত সদস্য যদি এমন করে থাকেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপরই দুই শাসকদলের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তিনি বলেন, দলের লাইনের বাইরে গেলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ করি। কিন্তু তৃণমূল বা বিজেপি এমনটা করতে পারবে কি?
এদিকে সিপিএমের এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, বহিষ্কার করতে করতে সিপিএম দলটাই উঠে যাবে। ওদের নিচের তলার লোকজন আমাদের সঙ্গে আছেন। সোনাচূড়াতে পুরোনো বামপন্থীরাই বিজেপিকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন। সিপিএমের লোকজন ভোট দিয়েছেন। ওঁরা কেউ সিপিএমকে ভরসা করেন না। বিজেপিকে ভরসা করেন। ফলে ওই উপর উপর হাট্টিমাটিম টিম করে লাভ নেই। এই বিষয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান এক জায়গায়। তাই নির্দেশ যারা অমান্য করেছে তাদের বিরুদ্ধে এক এক করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে আরও কয়েকজন বহিষ্কৃত হতে পারেন।
সৈকত শী