মা বিপত্তারিণী মা কালীর আরেক রূপ। বিপত্তারিণী পূজায় '১৩' সংখ্যাটির একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই পূজায় বরাদসূত্র (রাক্ষসূত্র) বাঁধার প্রথা রয়েছে। মহিলারা উপোস করেন এদিন। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই সুতো বেঁধে রাখলে স্বামী-সন্তানের উপর আসা সমস্ত বিপদ দূর হয়। যাঁরা বিবাহে অসুবিধার সম্মুখীন হন, তাঁরাও এই দিনে মা বিপত্তারিণীর আরাধনা করেন তাঁদের মনোবাঞ্ছা পূরণের জন্য। বিপত্তারিণী মন্ত্র ভক্তদের সকল প্রকার বিপর্যয় দূর করে। মা বিপত্তারিণীকে ১৩ ধরনের ফল, ফুল, মিষ্টি, পান, সুপারি এবং নারকেল নিবেদন করা হয়।
advertisement
আরও পড়ুন - Sribhumi Durga Puja: ৫০ বছরের সেলিব্রেশন, শ্রীভূমিতে সোনায় মোড়া দেবীর থিমের রহস্য ফাঁস
বিপত্তারিণী পুজোতে ১৩ রকম ফুল, ১৩ রকম ফল, ১৩টি পান, ১৩টি সুপারি এবং ১৩ গাছা লাল সুতোতে ১৩ গাছা দূর্বা দিয়ে ১৩টি গিঁট বেঁধে ধাগা তৈরি করতে হয়। ব্রাহ্মণ দ্বারা আম্রপল্লব-সহ ঘট স্থাপন করে নাম গোত্র সহযোগে পূজা দেয় বাঙালি মেয়েরা। পুজোর পরে শোনা হয় বিপত্তারিণীর ব্রতকথা। যা এই পুজোর অন্যতম অঙ্গ।
আরও পড়ুন - Rath Yatra 2022: ঐতিহ্য মেনে করোনা অতিমারির ২ বছর পরে ফের মহা সমারোহে মহেশের ৬২৬ বছরের রথ যাত্রা
পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে হিন্দু দেবী রূপে পুজিত হন এই দেবী। সঙ্কটনাশিনীর একটি রূপ এবং দেবী দুর্গা ১০৮ অবতারের মধ্যে অন্যতম এই দেবী। কথিত আছে বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য এই দেবীর পুজো করা হয়ে থাকে। লাল সুতোর ধাগা পুরুষদের ডান এবং মহিলাদের বাম হাতে ধারণ করা এই পুজোর নিয়ম। বিপত্তারিণী ব্রত সাধারাণত মহিলাদের ব্রত। এই ব্রত কমপক্ষে ৩ বছর পালন করা নিয়ম।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুকে ঐতিহ্য প্রাচীন ইতিহাস বিজড়িত বর্গভীমা মায়ের মন্দিরে দেখা গেল বিপত্তারিণী পুজো উপলক্ষে ভক্তদের আনাগোনা। মন্দিরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় রাস্তার পাশে পুজো উপলক্ষে উলের তৈরি বিভিন্ন ধরনের ডুরি অথবা ধাগা বিক্রি করতে দেখা যায় দোকানদারদের। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় রাজ্য সরকার রাজ্যের সমস্ত তীর্থস্থানের দরজা খুলে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে ভক্তদের জন্য। এদিন সকাল থেকে তমলুকের প্রাচীন বর্গভীমা মন্দিরে পুণ্যার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা বিপত্তারিনী পুজো উপলক্ষে।
Saikat Shee