উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, আট ইঞ্চি বাই বরো ইঞ্চি মাপের প্রভাত সাহিত্য পত্রিকার পৃষ্ঠা সংখ্যা থাকে দু’শোরও বেশি। তাতে থাকে রং বেরং এর আঁকিবুকি। নামজাদা কবি ও সাহিত্যিক থেকে শুরু করে একেবারে নবাগতদের হাতে লেখা কবিতা ও গল্পগুচ্ছ স্থান পায় এই সাহিত্য পত্রিকায়। এদিকে পত্রিকা প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত আনগুনা গ্রামের বাসিন্দারা জানালেন, ১৯৪৭ সালে আনগুনা গ্রামের কয়েকজন সাহিত্যপ্রেমী মানুষ প্রথম এই সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার পর থেকেই একই ধারায় চলে আসছে এই সাহিত্য পত্রিকার প্রকাশ।
advertisement
এই সাহিত্য পত্রিকাই এখন আনগুনা গ্রামের ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক ও বাহক হয়ে উঠেছে। গ্রামবাসীরা জানালেন, প্রতি বছর কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিন সন্ধ্যায় গ্রামের মন্দিরে লক্ষ্মীদেবীকে সাক্ষী রেখে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হয় ’শারদীয়া প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা’।এবছরও রবিবার লক্ষীপুজোর দিন সন্ধ্যায় হাতে লেখা ’প্রভাত’ সাহিত্য পত্রিকার ৭৬ তম সংখ্যা প্রকাশিত হবে। যার চুড়ান্ত প্রস্তুতি শনিবার থেকেই শুরু করে দিয়েছেন ক্লাব সদস্যরা। কৃষি সম্বৃদ্ধ এই গ্রামের বাসিন্দাদের আরাধ্য দেবী হলেন লক্ষ্মী।
আরও পড়ুনঃ দুর্গাপুজোর পাশাপাশি বিষ্ণুপুর গ্রামে লক্ষ্মী পুজোও চারদিন ধরে!
কোজাগরী পূর্ণিমায় এই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে পূজিতা হন লক্ষ্মী দেবী। গ্রামের মূল মন্দিরেও লক্ষ্মীদেবীর পুজোর আয়োজন করা হয়। কর্মসূত্রে বছরের অন্য দিনগুলিতে এই গ্রামের অনেককেই বাইরে কাটাতে হয়। তবে সারা বছর যে যেখানেই কাটান না কেন লক্ষ্মী পুজোর আগে সবাই ফিরে আসেন গ্রামে। তারা সবাই মাতোয়ারা হন ধনদেবীর আরাধনায়। লক্ষ্মীদেবীকে সাক্ষী রেখে প্রকাশিত হওয়া ’প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা’ আনগুনা গ্রামে।
আরও পড়ুনঃ প্রতিমা বিসর্জনের আগে মা দুর্গাকে বিদায় জানালেন মহিলারা
এ বিষয়ে পত্রিকা প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত অমিত রায় জানান, কাজী নজরুল ইসলাম, কালিদাস রায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, নবনীতা দেবসেন, সত্যজিত্ রায় ও আরও অনেক বিখ্যাত সাহিত্যিকদের লেখনীতে সমৃদ্ধ হয়েছে প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা। আগে এই সকল লেখকদের নিজের হাতে লেখা পাণ্ডুলিপিও প্রকাশিত হয়েছে এই সাহিত্য পত্রিকায়। শুধু বিখ্যাত কবি ও সাহিত্যিকদের লেখাই যে এই পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এমনটা নয়। আনগুনা-সহ আশেপাশের গ্রামের সাহিত্য প্রেমী তরুণ, তরুণীদের লেখা কবিতা, গল্প সবই গুরুত্ব দিয়ে তাঁদের সাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। লক্ষ্মী পুজোর অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় পত্রিকা প্রকাশনার কাজ।
Malobika Biswas