দুর্গা পুজোর রীতি মেনে বর্ধমানের সদর ঘাটে নবপত্রিকা স্নান করাতে ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ। বর্ধমানের নানা প্রান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন সদর ঘাটে। ঢাকের বাদ্যি সহযোগে হল নবপত্রিকা স্নান বা কলা বউ স্নান । স্নানের পর নবপত্রিকা নিয়ে যাওয়া হয় মন্ডপে মণ্ডপে। ঘাট থেকে ঘটিতে জল তুলে নিয়ে যাওয়ার রীতি রয়েছে পুজোয়। সেই ঘট প্রতিষ্ঠা করতে হয় পূজো মন্ডপে। সেইমতো এদিনও সদরঘাটে দেখা যায় ঘট ভরে জল নিয়ে যেতে বহু মানুষকে।
advertisement
আরও পড়ুন: একই প্রশ্নপত্রে MCQ ও SAQ, একই খাতায় উত্তর! ২০২৩ উচ্চ মাধ্যমিকে বড় বদল
নবপত্রিকা শব্দের অর্থ নয়টি গাছের পাতা। তবে, দুর্গাপুজোর নবপত্রিকাতে থাকে নয়টি উদ্ভিদ। সেগুলো হল কদলী বা কলা, কচু, হরিদ্রা বা হলুদ, জয়ন্তী, বিল্ব বা বেল, দাড়িম্ব বা ডালিম, অশোক, মানকচু ও ধান। যাকে একসঙ্গে সংস্কৃতে বলা হয়, রম্ভা কচ্চী হরিদ্রাচ জয়ন্তী বিল্ব দাড়িমৌ। অশোক মানকশ্চৈব ধান্যঞ্চ নবপত্রিকা।নবপত্রিকার আচারে কলাগাছের সঙ্গে আটটি মূল ও পাতা-সহ উদ্ভিদ একসঙ্গে একজোড়া বেল-সহ শ্বেত অপরাজিতার লতা দিয়ে বেঁধে লালপেড়ে সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর মত সাজানো হয়। বেলদুটি দিয়ে মহিলাদের স্তনযুগলের মত করা হয়। তারপর সিঁদুর দিয়ে গণেশের ডান দিয়ে দাঁড় করিয়ে পুজো করা হয়। যাকে বলা হয় কলা বউ।
আরও পড়ুন: পেশাদাররা হতে পারেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, UGC-র নতুন নির্দেশ
নবপত্রিকার এই নয়টি উদ্ভিদকে দেবী দুর্গার নয়টি রূপের প্রতীক হিসেবে কল্পনা করা হয়। এর মধ্যে কলাগাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী রূপে ব্রহ্মাণীকে, কচুর অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবে কালিকাকে, হলুদের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবে উমাকে, জয়ন্তী গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবে কার্তিকীকে, বেল গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবে শিবাকে, দাড়িম্ব গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবে রক্তদন্তিকাকে, অশোক গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবে শোকরহিতাকে, মানকচু গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবে চামুণ্ডাকে, ধান গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবে লক্ষ্মীকে পুজো করা হয়। যাকে একত্রে বলে ‘নবপত্রিকাবাসিনী নবদুর্গা’।
মালবিকা বিশ্বাস