৫০ বছর আগের সেই স্মৃতি বয়ে চলেছে ইংরেজদের স্মৃতি বিজড়িত এই স্টেশন। শুধু ইংরেজ শাসনকালে যে মেদিনীপুর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তা নয়, বিপ্লবের দুর্জয় ঘাঁটি এবং চলচ্চিত্রের এক অন্যতম দৃশ্যপট সূচনা হয়েছিল এই স্টেশনে। তখন যুবক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অন্যদিকে সিনেমার নায়িকা অপর্ণা সেন। সেদিনের প্রেমের সেই সাদা কাল ছবি ‘বসন্ত বিলাপ’-এর ক্লাইম্যাক্সে ইঞ্জিনের ধোঁয়া উড়িয়ে প্যাসেঞ্জার ট্রেন মেদিনীপুর স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই ফুট ওভারব্রিজে পা-রাখা নায়িকা অনুরাধার (অপর্ণা সেন)। ১৯০১ সালের দিকে শহর মেদিনীপুরের সঙ্গে কলকাতা শহরের যোগাযোগের জন্য বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ের অধীনে মেদিনীপুর স্টেশন প্রতিষ্ঠা হয়।
advertisement
পাথরের উপর পাথর সাজিয়ে তৈরি করা হয় এই স্টেশন। চলত কয়লা ইঞ্জিন। ইংরেজ সময়কালে বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে এর অধীনে রেলপথ বিছানোর কাজ শুরু হয়। যার বর্তমান নাম দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে। তবে খড়গপুর স্টেশন এর প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর মেদিনীপুর শহরের কথা ভেবে মেদিনীপুরের তৈরি করা হয় স্টেশন। চলত একাধিক প্যাসেঞ্জার ট্রেন। ১৯৭৩ সালেই এই স্টেশনে শুটিং করা হয় বিখ্যাত সিনেমা ‘বসন্ত বিলাপ’। যেখানে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন, রবি ঘোষের মত বিখ্যাত কলাকুশলীরা।
মেদিনীপুর শহরের অলিতে গলিতে শুটিং হলেও সিনেমার এক পরিচিত এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দৃশ্য শুটিং করা হয়েছিল তৎকালীন মেদিনীপুর স্টেশনে। দৃশ্যে দেখান হয়েছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অপেক্ষা করছেন আর তার সঙ্গে দেখা করতে রুদ্ধশ্বাসে এসেছেন অপর্ণা সেন। ঠিক ক্লাইম্যাক্স এবং প্রেমের কাহিনী চোখে জল এনে দিয়েছিল সকলের। এত নিবিড় ভালবাসা শুধু সিনেমা চরিত্রে নয়, বাস্তবের সঙ্গেও অনেকে মিল খুঁজেছেন। তবে ইতিহাস এবং ঐতিহ্য বহন করে চলা এই প্রাচীন মেদিনীপুর স্টেশন এর ভোল বদলে দিচ্ছে রেল। ঝাঁ চকচকে হচ্ছে মেদিনীপুর স্টেশন। তবে ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের সাক্ষী ব্রিটিশদের তৈরি এই স্টেশন।





