বিশেষত উত্তরবঙ্গের মানুষ দশকের পর দশক ধরে এটাই দেখে এসেছিল আদিবাসী চা বাগান শ্রমিকের হাতের আঙুলের আলতো চাপে গাছ থেকে তোলা হচ্ছে দুটি পাতা একটি কুঁড়ি। শ্রমিকদের দক্ষ হাতে বেছে বেছে তোলা দুটি পাতা একটি কুঁড়ির চা বিশ্ব দরবারে খ্যাতিপ্রাপ্ত। তবে বর্তমানে সেই দৃশ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন শ্রমিকের মজুরি বাঁচাতে ক্ষুদ্র থেকে বড় বেশিরভাগ চা বাগানেই ব্যবহার করা হয় অত্যাধুনিক যন্ত্রের ধারালো ব্লেড। আর এই প্রযুক্তির ধারালো ব্লেডের ধারে শুধু দুটি পাতা একটি কুঁড়ি নয়, চা পাতা তৈরির অযোগ্য পাতা সহ ডালপালা পৌছে যাচ্ছে চা তৈরির কারখানায়।
advertisement
চা শ্রমিকদের মজুরি তো বাঁচছে কিন্তু স্বাদ কমছে চা ‘ এর। চা প্রেমীরা ভুলতে বসেছেন আসল চায়ের ব্লেন্ড। এরই সঙ্গে চা শ্রমিকদের জীবন জীবিকাই আঘাত পড়ায়, চা বাগানে কাজ না থাকায় ডুয়ার্স থেকে দলে দলে মানুষ পাড়ি জমায় ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের পরিচয় কাঁধে নিয়ে। এই প্রসঙ্গে দীর্ঘ সময় চা উৎপাদনের কাজে সক্রিয় ভাবে যুক্ত থাকা বাগান পরিচালক বলেন, কিছুটা হলেও পরিবর্তন হবেই, লোহার ব্লেডে কাটার কারণেচা পাতায় থাকা রস ফারমেন্টেড হয় দ্রুত। এছাড়া পাতা তোলার পর পুনরায় গাছে কাটা পরে থাকা পাতা পরিষ্কার করাটা খুবই জরুরি। যেগুলি অত্যাধুনিক যন্ত্রের দ্বারা কখনোই দক্ষ শ্রমিকদের মত কাজ করা সম্ভব নয়। কিন্তু, দিনের পর দিন এভাবেই অত্যাধুনিক যন্ত্রের চাপে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্য, হারিয়ে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের সেই চায়ের স্বাদ।
Surajit Dey