উত্তরবঙ্গের চা-বাগান এলাকায় লেপার্ডের হানা নতুন নয়। গত কয়েক বছরে কলাবাড়ি ও পার্শ্ববর্তী চা-বাগানগুলিতে একের পর এক শিশুমৃত্যুর ঘটনা আতঙ্ক বাড়িয়েছে শ্রমিক মহল্লায়। অবশেষে সেই দুঃস্বপ্ন ঠেকাতে সুন্দরবনের পথ অনুসরণ করল বন দফতর।
advertisement
জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণ শাখার উদ্যোগে কলাবাড়ি চা বাগানের হুলাস লাইন এলাকায় বসানো হল ১০-১২ ফুট উঁচু নাইলনের ফেন্সিং। এর পাশাপাশি বসানো হয়েছে ট্র্যাপ ক্যামেরা। সুন্দরবনে যেভাবে বাঘের হামলা রুখতে বিশেষ নেট ব্যবহার করা হয়, উত্তরবঙ্গে এই প্রথমবার সেই প্রযুক্তির প্রয়োগ।
লেপার্ডের ত্রাস কতটা গভীর, তার প্রমাণ চলতি বছরের ১৮ জুলাইয়ের ঘটনা। সাত বছরের এক শিশুকে শ্রমিক লাইনের সামনেই টেনে নিয়ে গিয়েছিল চিতা। পরে উদ্ধার হয় তার নিথর দেহ। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার পর থেকেই বন দফতর মানুষ-বন্যপ্রাণ সংঘাত থামাতে তৎপর। রেঞ্জ অফিসার হিমাদ্রি দেবনাথ জানান, “চা বাগান থেকে সরাসরি শ্রমিক মহল্লায় ঢুকে আক্রমণ করছে লেপার্ড। তাই সম্ভাব্য অঞ্চলগুলিতে পরীক্ষামূলকভাবে সুন্দরবনের স্ট্রাটেজি ব্যবহার করা হয়েছে। এটি উত্তরবঙ্গে প্রথম।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ফেন্সিং বসানো হয়েছে চা বাগান ও জনবসতির মাঝের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলিতে। সঙ্গে রয়েছে ট্র্যাপ ক্যামেরা। লক্ষ্য, যেন চা গাছের আড়াল ভেঙে আর কোনও লেপার্ড মানুষের বসতিতে ঢুকতে না পারে। স্থানীয়দের মতে, এই ফেন্সিং অন্তত মানসিক নিরাপত্তা দেবে। বহু পরিবার সন্ধ্যার পর শিশুকে বাইরে বেরোতে দিতেও ভয় পেতেন। এখন তাদের আশা, এই উদ্যোগে অন্তত হামলার সংখ্যা কিছুটা কমবে।
বন দফতর জানিয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে সাফল্য মিললে ভবিষ্যতে চিতা-প্রবণ অন্যান্য এলাকাতেও একই ধাঁচে ফেন্সিং ও ক্যামেরা বসানো হবে। মানুষ ও বনের সহাবস্থানে নতুন পথ দেখাল উত্তরবঙ্গ।





