দার্জিলিং চা’য়ের এই অবস্থা নিয়ে ইতিমধ্যেই তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাহাড়ে দাঁড়িয়েই তিনি উল্লেখ করেছিলেন বিশ্ব বিখ্যাত দার্জিলিং চা’কে রক্ষা করতে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে। বিশ্বের কাছে আসল দার্জিলিং চা’য়ের সুনাম ধরে রাখা হবে।তার এই ঘোষণার পরেই চা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে সরকার। বাংলা-নেপাল সীমানা ও বাংলা-অসম সীমানায় তৈরি হচ্ছে দুটো ল্যাবরেটরি। দুটোই হবে FSSAI এর অনুমোদন মেনেই।সূত্রের খবর, টি অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।দুটি ল্যাবরেটরি তৈরিতে খরচ হবে ২৬ কোটি টাকা করে মোট ৫২ কোটি টাকা। আধ ঘণ্টার মধ্যেই জানা যাবে চা’য়ের গুণমান বা পেস্টিসাইডের পরিমাণ।
advertisement
দার্জিলিং টি অর্গ্যানিক। নেপালের চা কিন্তু অর্গ্যানিক নয়। ফুড সেফ্টি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্স অথরিটি অফ ইন্ডিয়া পরীক্ষা করলেই এটা ধরা পড়ে যাবে।অভিযোগ পড়শি দেশ, নেপালের চায়ের উৎপাদন খরচ আমাদের থেকে অনেক কম। কারণ ওখানে লেবার ল নেই। মজুরি ছাড়া শ্রমিকদের অন্য কোনও সুবিধা দিতে হয় না। ফলে, ভারতের দোকানদাররা বেশি লাভের জন্য দার্জিলিং টি–র নামে নেপালের চা বিক্রি করছে। কেন্দ্রীয় সরকার সব জেনেও চুপ করে বসে আছে। আর লোকসানের ঠেলায় দার্জিলিংয়ে ৮৭টি বাগানের মধ্যে ১৬–১৭টি গত কয়েক বছরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
দার্জিলিং-টি অ্যাসোসিয়েশন (ডিটিএ) উদ্যোগী হয়ে টি বোর্ড অফ ইন্ডিয়া–র সঙ্গে আলোচনা করে দার্জিলিং টি–র জন্য জিআই ট্যাগ সুনিশ্চিত করেছিল। তার পর থেকে মোটামুটি সব ঠিকই চলছিল। ২০১৭ সালের জুন থেকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ডাকে দার্জিলিংয়ে ১০৭ দিনের রাজনৈতিক ধর্মঘট হয়। ধর্মঘটের ফলে পাহাড়ের সব বাগান বন্ধ হয়ে গেল। সেই সুযোগে ভারতের সব বাজারে নেপালের চা ঢুকে গেল। টি-বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত তিন বছরে প্রায় ৩৭ মিলিয়ন কেজি নেপালের চা নিম্নমানে চোরাপথে ঢুকে ভারতে দার্জিলিং চা বলে বিক্রি হয়েছে। কেন্দ্রের আইন থাকলেও কোনও আইনই ঠিকমত মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ চা বাগান মালিকদের।
আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে ফের থমকে গেল হোয়াটসঅ্যাপ! বিভ্রাট ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকেও
চলতি বছরে আবহাওয়া জনিত কারণে ৬ লাখ কেজি চায়ের উৎপাদন কম হয়েছে। ফলে নেপাল ও আসামের চা বাজারে ঢুকেছে। নতুন বছর থেকে বাগান বাঁচাতে তাই ময়দানে নামছে রাজ্য সরকার।