রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব শুরুর পর থেকেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে শাসক দলের বিরুদ্ধে ধমকানি, চমকানির অভিযোগ তোলে বিজেপি।সেই অভিযোগ নিয়েই রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ভোটের দিন বিভিন্ন এলাকার বুথে বুথে নজরদারি করেন। ভোট পরবর্তী হিংসারও অভিযোগ তোলা হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন – Birbhum news: অনুব্রত কন্যা তাঁর বান্ধবী! তিহার সংশোধনাগারে দেখা করে দারুণ মন খারাপ সুতপার
advertisement
তবে রাজ্যের অন্যান্য জেলায় যতটা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, সেই তুলনায় এতটাও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। তবুও শাসকদলের ব্যাপক জয়ের পেছনে শাসক দলের দেওয়া বিভিন্ন প্রকল্প কাজ করেছে, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
এবার আসা যাক দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলের ব্যাপারে। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা জুড়ে প্রায় সমস্ত আসনেই শাসক বিরোধী শিবির প্রার্থী দিয়েছিল।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একাধিক গ্রামীণ এলাকায় দেখতে পাওয়া গিয়েছে ব্যাপক জোড়া ফুলের ঝড়। গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের ১৩০৮ টি আসনের মধ্যে মোট ৮৭১ টি আসন পেয়েছে রাজ্যের শাসক দল। জেলা পরিষদের ২১টি আসনেই তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করেছে।
বালুরঘাট লোকসভা আসন থেকে সাংসদ রয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। তার সাংসদীয় ক্ষেত্রে মোট ব্লক রয়েছে ৯ টি। বালুরঘাট, তপন, হিলি, কুমারগঞ্জ, গঙ্গারামপুর, বংশীহারী, হরিরামপুর, কুশমন্ডি,ইটাহার। মোট বিধানসভার সংখ্যা ৭টি। বালুরঘাট, কুমারগঞ্জ, তপন, গঙ্গারামপুর, হরিরামপুর, কুশমন্ডি এবং ইটাহার।
এই এলাকার মোট নয়টি পঞ্চায়েত সমিতির সব কটিই গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন ১৮৯টি। পঞ্চায়েত সমিতি আসনের মধ্যে ১৬৪ টি আসন তৃণমূল কংগ্রেস,২৪টি আসনে বিজেপি ও বামফ্রন্ট ১টি আসনে জয়লাভ করেছে।
শুধু তাই নয় ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি এ জেলাতে প্রায় ১৫ টি প্রধান গড়লেও, এবারে তাদের এখন পর্যন্ত এককভাবে বোর্ড গড়ার মতো পরিস্থিতি রয়েছে, তিনটি পঞ্চায়েতে।
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ৫ লক্ষ ৪০ হাজারের কাছাকাছি ভোট পেয়েছিলেন। অপরদিকে শাসক দল ভোট পেয়েছিল ৫ লক্ষ ৫ হাজারের কাছাকাছি। অর্থাৎ, লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে সুকান্ত মজুমদার প্রায় ৩৪ হাজার ভোটে জিতেছিলেন।
গত বিধানসভা নির্বাচনের এই লোকসভায় বিজেপি ৩ টা আসন এবং তৃণমূল ৪ টা আসন জিতেছিল। বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে তৃণমূল প্রায় ১ লক্ষ ভোটে এগিয়ে ছিল।
এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের নিরিখে প্রায় ১ লক্ষ ভোটের ব্যবধান রয়েছে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের। তাই আগামী লোকসভা নির্বাচন যে বিজেপির কাছে খুব কঠিন হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য।
পরিসংখ্যান হিসেবে বলা যেতে পারে, লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল ৩৪ হাজার ভোটে পিছিয়ে থাকলেও বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল অনেকটাই এগিয়ে গেছে।
Susmita Goswami