শিলিগুড়ি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ফের চালু হল ন্যাশনাল স্মল ইন্ডাস্ট্রিস কর্পোরেশন লিমিটেড (NSIC)-এর সাব ব্রাঞ্চ অফিস। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ এই প্রতিষ্ঠান বিগত ৭০ বছর ধরে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের (MSME) উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। করোনাকালে শিলিগুড়ির অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের উদ্যোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল সরকারি সহায়তা পাওয়া। অনেকেই সমস্যায় পড়েও অপারগ ছিলেন গৌহাটি বা কলকাতা যাওয়ার মতো খরচ ও সময় জোগাতে। এবার সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান মিলল।
advertisement
এই নতুন শাখা অফিস উদ্বোধনের সময় NSIC-এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডঃ শুভ্রাংশ শেখর আচার্য বলেন, “উত্তরবঙ্গ হল একদিকে পর্যটনের হাব, অন্যদিকে বহু সম্ভাবনাময় ছোট ইন্ডাস্ট্রির আঁতুড়ঘর। এখন থেকে আর কাউকে শহর ছাড়িয়ে যেতে হবে না। শিলিগুড়িতেই মিলবে সবরকম সরকারি স্কিম, ট্রেনিং ও মার্কেট অ্যাকসেস সংক্রান্ত সহায়তা।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
অফিসটির চিফ ম্যানেজার সঞ্জীব কুমার ডেকা জানান, “আমাদের টার্গেট হচ্ছে ‘ডোর টু ডোর’ পরিষেবা। উদ্যোক্তার কাছে পৌঁছে যাওয়া আমাদের দায়িত্ব। শিলিগুড়ি অফিস থেকেই এবার উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের MSME কার্যক্রম পরিচালিত হবে।” এই অফিসের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা পাবেন ব্যবসা শুরু করতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা, সরকারি স্কিম ও ভর্তুকির তথ্য, উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা, মার্কেট লিঙ্কেজ ও ট্রেনিং, গ্রোথ ক্যাপিটাল এবং বিনিয়োগকারীদের সংযোগ।
শিল্প জগতে ৩৫ বছরের অভিজ্ঞ প্রবীণ উদ্যোক্তা উৎপল সরকার বলেন, “অনেক নতুন উদ্যোক্তা কোথা থেকে শুরু করবেন, সেটা জানেন না। NSIC তাঁদের হাতে ধরে নিয়ে চলবে। এটা শুধু একটা অফিস নয়, এটা একটা নতুন দিশা, নতুন স্বপ্ন দেখার জায়গা।” তিনি আরও যোগ করেন, “আগে সরকারি স্কিম নিয়ে জানতেই পারত না অনেকে। এখানকার অফিসে এসে তারা মুখোমুখি কথা বলতে পারবে, সমস্যা জানাতে পারবে, সলিউশনও পাবে।”
এনএসআইসির এই পদক্ষেপ শুধু সরকারি অফিস খোলা নয়, বরং উত্তরবঙ্গের শিল্প মানচিত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। ছোট ছোট উদ্যোগ, হস্তশিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, রুরাল স্টার্টআপ, অ্যাগ্রো বেসড কোম্পানি, সব ক্ষেত্রেই এই অফিস হতে চলেছে এক নতুন সহায়ক প্ল্যাটফর্ম। ছোট ব্যবসার যাত্রাপথ কঠিন হলেও, সঠিক পথপ্রদর্শক থাকলে সফল হওয়া সম্ভব, সেটাই যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে এই অফিসের ঘরোয়া অথচ সাহসী উদ্বোধন।
ঋত্বিক ভট্টাচার্য