বিপর্যয়ের রাত থেকেই নিখোঁজ হিমাদ্রি। তাঁর খোঁজে নদীতে ডুবুরি নামানো হয়েছে। এমনকী আর্থ মুভার দিয়ে নদীর পাড়ের বালি, পলি সরিয়েও তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। বালাসন নদীতে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন।
ওই এলাকায় একটি জামা পাওয়া গিয়েছে। সেটি হিমাদ্রির কিনা, এখনও তা স্পষ্ট নয়। হিমাদ্রির নিখোঁজের খবর নিয়ে উদ্বিগ্ন তাঁর বন্ধুরাও। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন তাঁরা। কেউ কোনও খবর পেলে তৎক্ষণাৎ সেটা জানাতে বলা হয়েছে।
advertisement
ছোট থেকেই পাহাড়ের প্রতি টান ছিল হিমাদ্রির। ভ্রমণের নাম করে প্রায়শই পাহাড়ে চলে যেতেন। ভ্রমণ করতে গেলে পাহাড়ে থাকা এবং খাওয়ার তো খরচ রয়েছে, তাই ভ্রমণের পাশাপাশি হোমস্টে-র কাজ বেছে নিয়েছিলেন হিমাদ্রি। সম্প্রতি এক বন্ধুর মাধ্যমে যোগাযোগ করে সুখিয়াপোখরি এলাকার সোনাদা গ্রামে ‘বাগার ফার্মস্টে’তে কাজ পেয়েছিলেন।
২২ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে বেরিয়ে সেখানেই যান হিমাদ্রি। শনিবার বিপর্যয়ের আগে হোমস্টের ধারে একটি তাঁবুতে রাত কাটাচ্ছিলেন।
রাত প্রায় দশটা নাগাদ ফোন করে মাকে খারাপ আবহাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এদিকে, হোমস্টের মালিক-সহ অন্য সহকর্মীদের তিনি সতর্ক করেছিলেন, নদীতে জল বাড়ছে। আমি ভেসে যাচ্ছি। তোমরা পালাও।
শনিবার রাতে মোবাইল ফোনে সুখিয়াপোখরির হোমস্টের সহকর্মীদের এমন বার্তা দিয়ে নিখোঁজ হন ডায়মন্ডহারবারের হিমাদ্রি পুরকাইত। সংশ্লিষ্ট হোমস্টের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পেয়েছে প্রশাসন।
এর পর থেকেই তাঁর ফোন বন্ধ। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে ওই হোমস্টে সহ সোনাদা গ্রামের একাংশ। গোটা এলাকাটাই তছনছ হয়ে গিয়েছে। বড়বড় গাছ, বোল্ডার আর কাদার স্রোত ভেসে আসতে থাকায় বহু হোমস্টে, হোটেল ও কটেজ ধ্বংস স্তুপে পরিণত হয়েছে। সেখানকার বহু মানুষই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। গোটা এলাকা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় সেখানে উদ্ধার কাজ চালাতেও ব্যাঘাত ঘটছে।
বিপর্যয়ের পর ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রবিবার রাতে নিখোঁজ হিমাদ্রির বাড়িতে গিয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন সাংসদের প্রতিনিধিরা। সাংসদ প্রতিনিধি তথা ডায়মন্ড হারবারের পর্যবেক্ষক শামিম আহমেদ বলেন, ‘বিপর্যয়ের পর থেকে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি এবং উদ্ধার কার্যের উপর প্রতিনিয়ত খোঁজ রাখছেন আমাদের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিখোঁজ হিমাদ্রির খোঁজে সেই এলাকায় ভাল করে তল্লাশি চালানোর নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের তরফে প্রতিনিয়ত সুখিয়াপোখরির পরিস্থিতির উপর নজর রাখার পাশাপাশি হিমাদ্রিকে খুঁজে বের করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশাসন সূত্রে খবর, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে পাহাড়ি এলাকায় উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন- অনেক বৃষ্টি হল, আর নয়…! এসে গেল সুখবর, এবার বাংলা থেকে বর্ষা বিদায়ের দিন ঘোষণা
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা শাসক সুমিত গুপ্তা জানিয়েছেন, ‘নিখোঁজের খোঁজে উদ্ধারকার্য চলছে। ওখানকার পরিস্থিতির উপর নজর রাখার পাশাপাশি খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’