উত্তরবঙ্গের গ্রামীণ লোকসংস্কৃতিতে এই পালাগান শুনতে পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে এই পালাগানের শিল্পীদের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। তবুও বেশ কিছু শিল্পী এই ঐতিহ্যবাহী পালাগান করতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে থাকেন। কোচবিহার মদনমোহন বাড়ির পুরোহিত শিবকুমার চক্রবর্তী জানান, ‘‘রাজ আমল থেকে হয়ে আসা এই পুজোর সময় তিনদিন ধরে চলে মনসা পালা বা বিষহরি পালাগান। এখনও সেই প্রথা অটুট। মনসামঙ্গল এবং পদ্মপুরাণের মতো কাব্যগ্রন্থ অবলম্বনে পালাগানের আয়োজন করা হয়। এই পালাগান আজও বহু মানুষের মন আকর্ষণ করে থাকে।’’
advertisement
মনসা পালাগান শিল্পী পরিমল বর্মন জানান, ‘‘এই পালাগান দীর্ঘ সময়ের পুরনো। তিনিও প্রায় ১২ বছর ধরে এই পালাগানের সঙ্গে যুক্ত। বহু মানুষ এই পালাগান ছেড়ে অন্য কাজ করেন ঠিকই। তবে এই পালাগানের মধ্যে এক আলাদা তৃপ্তি রয়েছে। পালাগানের শিল্পীরা ছাড়া এই তৃপ্তি অন্যরা উপভোগ করতে পারবেন না।”
আরও পড়ুন : চিঠি লেখাই নেশা, দেশবিদেশের বহু বিখ্যাত ব্যক্তিত্বকে চিঠি লিখে উত্তর পেয়েছেন অসিতবরণ
আর এক পালাগান শিল্পী ময়না বর্মন জানান, ‘‘ মনসাপুজো উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকায় শোনা যায় মনসা বা বিষহরি পালা গান। যদিও গ্রামীণ লোকসংস্কৃতি থেকে এক প্রকার হারিয়ে যেতে বসেছে এই মনসা বা বিষহরি কিংবা সাইটোল গান। তবুও পুজোর তিনদিন প্রতিবছর মদনমোহন বাড়িতে কাঠামিয়া মন্দিরের সামনে মঞ্চ বেঁধে এই বিষহরি পালা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মনসা মঙ্গল, পদ্মপুরাণ এইসব কাব্য থেকে কিছু কিছু অংশ বাছাই করে এই পালা তৈরি করা হয় থেকে।’’
দীর্ঘ সময়ের রীতি আজও অক্ষুণ্ণ রাখা হয় কোচবিহার মদনমোহন বাড়িতে। প্রতি বছর পালাগান শিল্পীদের দ্বারা এখানে পালা গানের আয়োজন করা হয়। আগামী দিনেও এই প্রথা একই রকম ভাবে বজায় থাকবে। এমনটাই জানিয়েছেন কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড কর্তৃপক্ষ। যাতে শহরের বুক থেকে রাজ আমলের এই ঐতিহ্য বিলীন না হয়ে যায়।