একসময় শ্মশানযাত্রীদের জন্য এই লুচি তৈরি হলেও এখন বহু মানুষ এই লুচির টানেই সাদুল্লাপুরে আসেন।একশো বছরের বেশি সময় ধরে এই লুচি বিক্রি হয়ে আসছে মালদহের সাদুল্লাপুরে। স্থানীয় ভাষায় এই লুচির নাম ‘হাতি পায়য়া ‘। এমন নাম করণের কারণ লুচির আকার। একটি বা দুইটি লুচি খেলেই পেট ভরে যায়। বিখ্যাত এই লুচির সঙ্গে পরিবেশন করা হয় আলু ছোলার ডালের সবজি ও মিষ্টি।
advertisement
লুচি বিক্রেতা পুলক সরকার বলেন, আমি প্রায় ৪০ বছর ধরে এই ব্যবসা করছি। আমার পূর্বপুরুষ এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। বিশাল আকারের লুচির জন্যই বিখ্যাত। প্রথম থেকেই এত বড় লুচি তৈরি হয়ে আসছে এখানে, এটি আমাদের ঐতিহ্য। এই লুচির টানেই বহু মানুষ এখানে ভিড় করছেন। মালদহের সাদুল্লাপুর একটি হিন্দুদের তীর্থক্ষেত্র। ভাগীরথী নদীর তীরে এই গ্রাম। তবে জেলা জুড়ে সাদুল্লাপুরের নাম মহা শ্মশানের জন্য। কয়েকশো বছর ধরে এখানে ভাগীরথী নদীর তীরে মৃত দেহ দাহ করা হয়।
আরও পড়ুন: ৫৩ বছরে হারিয়ে গেছে ২০ হাজার মানুষ, পৃথিবীর যেখানে গেলে ফেরে না কেউ! কোথায় এই জায়গা?
এছাড়াও এখানে বহু মানুষ গঙ্গাস্নানে আসেন। শ্মশান যাত্রীদের জন্যই এক সময় এখানে লুচি বিক্রি শুরু হয়েছিল। স্থানীয়দের কথায়, এই লুচি প্রায় একশো বছরের পুরনো। প্রথমদিকে একটি দোকান ছিল। বর্তমানে এখানে ছয়টি দোকান তৈরি হয়েছে। কয়েক পুরুষ ধরে এখানে লুচি তৈরি করছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী।সময় বদলেছে, সঙ্গে লুচির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু লুচির আকারে কোন পরিবর্তন হয়নি। বর্তমানে একশো টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে হাতি পায়য়া লুচি। সঙ্গে সবজি একশো টাকা কেজি। আট থেকে দশটি লুচির ওজন এক কেজি। তবে পিস হিসাবেও বিক্রি হয়। এখানে এক পিস লুচির দাম ২৫ টাকা সঙ্গে সবজি দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দা পঙ্কজ মিশ্র বলেন, ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি এর লুচির টানে বহু মানুষ এখানে আসেন। সাদুল্লাপুর একটি ধর্মীয় স্থান। বিভিন্ন সময় এখানে বহু মানুষ আসেন। তবে লুচির টানে অনেক মানুষ এখানে প্রথম থেকেই ভিড় করেন। এই লুচির জন্য আমাদের গ্রামের সুনাম হয়েছে। আমরা গর্বিত।
আরও পড়ুন: ‘বাংলাতেই এমন হয়!’ স্পেনে শিল্প ঘোষণা নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের জবাবে বিস্ফোরক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
অনান্য লুচির থেকে এই লুচি খেতেও একটু আলাদা। এই লুচি খেতে মুচমুচে। ছাঁকা তেলে লুচি ভাজা হয়। তাই খেতে মুচমুচে হয়। এখানেই সাধারণ লুচির থেকে স্বাদে ফারাক। ছয়টি দোকানেই একই স্বাদের লুচি পাওয়া যায়। বর্তমানে এই লুচির সুনাম জেলা ছাড়িয়েছে। দূর দূরান্তের বহু মানুষ এখানে আসেন এই বিশাল আকারের লুচির টানে।
—— হরষিত সিংহ