হাসতে হাসতে কাজে গিয়েছিল গ্রামের যুবকরা, ফিরল কফিনবন্দি হয়ে। পাঁচ পাঁচটি নিথর কফিনবন্দি দেহ দেখে স্তম্ভিত গোটা গ্রাম। আর এই মৃত্যুর জন্য দরিদ্র, অর্থের অভাব এবং জেলায় শিল্প না থাকাকেই দায়ী করেছেন মৃতের পরিবারের সদস্য থেকে গ্রামবাসীরা। জম্মুর সুড়ঙ্গে ধসে আটকে মৃত পাঁচ শ্রমিকের মধ্যে ধূপগুড়ি ব্লকের মাগুর মারি ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই শ্রমিকের দেহ সকালে নিজের গ্রামে পৌঁছায় । আর বিকেল পাঁচটা নাগাদ বাকি তিন মৃত শ্রমিকের দেহ পৌছায় গধেয়ারকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের চড়চড়াবাড়ী গ্রামে। আর দেহ পৌঁছাতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা গ্রাম।
advertisement
বিমানের বদলে অ্যাম্বুলেন্সে করে আনা হয়েছে দেহ। রবিবার রাতে জম্মু কাশ্মীর থেকে অ্যাম্বুলেন্স রওনা দেয় ধূপগুড়ির উদ্দেশে। মঙ্গলবার সকালে মাগুরমারির দুই শ্রমিকের দেহ পৌঁছয় বাড়িতে।আর বিকেল বেলা পৌছায় গধেয়ারকুঠি গ্রামের বাসিন্দা তিন যুবকের দেহ। কয়েকদিন ধরেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। দেহ গ্রামে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন বাড়ির লোকেরা। হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান ওই দুই গ্রামে।
আরও পড়ুন: ক্ষমতার ৮ বছর! ২০১৪ থেকে সুশাসনের লক্ষ্যে কোন কোন প্রকল্প শুরু করল মোদি সরকার?
তবে এই মৃত্যুর জন্য শিল্প না থাকাকে দায়ী করেছেন গ্রামবাসীরা। কাজ না থাকার ফলেই গ্রামের যুবকরা ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে বলে দাবি তাদের। আর সেখানে গিয়েই প্রাণ হারাচ্ছে গরীব পরিবারের সন্তানরা। আর এই ঘটনার পর রীতিমতো আতঙ্কিত গোটা গ্রাম। এখনও যাঁরা ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করছে তাঁদের পরিবারের চাইছে গ্রামে ফিরে আসুক গ্রামের ছেলেরা, আর এখানে কাজ করে অর্থ উপার্জন করুক।
আরও পড়ুন: 'কোনও চিন্তা নেই, দল সঙ্গে আছে', মেখলিগঞ্জে ফিরে মুখ খুললেন পরেশ
গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ সরকার বলেন, গ্রামে কাজের অভাব তাই ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে যুবকরা, সেখান থেকে যা উপার্জন করে তা দিয়ে সংসার চলে। সরকার বলছে বেকারদের চাকরি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু গ্রামগঞ্জের ছেলেরা কোথায় কাজ পাচ্ছে! যদি তারা কাজ পেতে তাহলে কি ভিন রাজ্য যেত? বাসিন্দা সরস্বতী রায় বলেন, আমাদের ছেলেরা ভিন রাজ্যে কাজে গিয়েছে, এই ঘটনার পর আমরা দারুন দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। আমরা চাই ছেলেরা গ্রামে ফিরে আসুক, আর সরকার কারখানা করার ব্যবস্থা করুক আমাদের জেলায়। যাতে এখানকার ছেলেমেয়েরা এখানে কাজ করতে পারে ভিন রাজ্যে যাতে যাতে না হয়।
বৃহস্পতিবার জম্মু কাশ্মীরের রামবন সুড়ঙ্গে কাজ করার সময় টানেলে ধস নেমে তাতেই চাপা পড়েন দশ জন শ্রমিক। এর মধ্যে ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের গদেয়ারকুঠী গ্রামের তিনজন ও মাগুরমারি দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দুজন শ্রমিক।
ROCKY CHWDHURY